আইপিএলে (২৬ মার্চ) কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে সবশেষ ম্যাচে নামেননি সুনীল নারিন। তবে বাকি দুই স্পিনার মঈন আলী ও বরুণ চক্রবর্তী অবশ্যই সেই অভাবটি বুঝতে দেননি। এই স্পিনারের ঘূর্ণি জাদুতে ৯ উইকেটে মাত্র ১৫১ রানের পুঁজি পায় রাজস্থান রয়্যালস। কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে চড়ে, ৮ উইকেট আর ১৫ বল হাতে রেখেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কেকেআর।

গুয়াহাটির মন্থর উইকেট দেখেই, টস জিতে প্রথমে রাজস্থানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় কেকেআর। দেখেশুনে ব্যাটিং করছিলেন রাজস্থানের ব্যাটসম্যানরা। সাঞ্জু স্যামসন ১৩ রানে ফিরলে যশস্বী জয়সোয়ালের সাথে যোগ দেন রিয়ান পরাগ। পাওয়ার’প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৪ রান তোলে রাজস্থান। পরাগ ভালো শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি, থেমেছেন পাওয়ার’প্লে শেষেই।

দলের ৬৭ রানের মাথায় ১৫ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন পরাগ। পরের ওভারে ২৪ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান ফিরেছেন জায়সোয়াল। এরপর দ্রুত আরও ২ উইকেট হারিয়েছে তারা। আউট হন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং নিতিশ রানা। পরে কিছুটা লড়াই চালিয়েছেন ধ্রুব জুরেল। তবে উইকেটের পতন ঠেকানো যাচ্ছিল না। ২৮ বলে ৩৩ রান করে দলের ১৩১ রানের মাথাতে আউট হয়েছেন জুরেল।

আরো পড়ুন:

ডি ককের ব্যাটে চড়ে হেসেখেলে জিতল কেকেআর

গ্যালারিতে বসে আইপিএল অভিজ্ঞতা: অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়

বাকি ব্যাটাররা যোগ দিয়েছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানের পুঁজি দাঁড়ায় রাজস্থানের। কলকাতার হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন বরুণ চক্রবর্তী, মঈন আলী, হার্শিত রানা, বৈভব অরোরা।

ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কেকেআরের মঈন ও আজিঙ্কা রাহানে দ্রুত ফেরেন। এই দুজনের ব্যাট থেকে আসে যথেক্রমে ৫ ও ১৮ রান। তবে অন্য প্রান্তে অবিচল ডি ককের হার না মানা ৯৭ রানে সহজেই জয় তুলে নেয় কেকেআর। এই প্রোটিয়া কিপার-ব্যাটার ৬১ বলে ৮ চার আর ৬ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৯৭ রানে। ১৭ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন অঙ্গকৃষ রঘুবানসি।

আসরের প্রথম জয় পেল কেকেআর। অন্যদিকে রাজস্থান দুম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ক আর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ