নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে: রবি
Published: 27th, March 2025 GMT
দেশের অন্যতম মোবাইল অপারেটর রবি বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনেক জায়গায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে রবির নেটওয়ার্কে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত তিন মাসে বিভিন্ন স্থানে দুর্বৃত্তরা রবির মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত টাওয়ার। নিরাপত্তাকর্মীদের হুমকি দেওয়া, অপহরণের ঘটনাও ঘটছে বলে জানিয়েছে রবি।
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেছে রবি। নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রবি বলেছে, অপরাধী চক্র কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে অপহরণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে টাওয়ারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
রবি বলেছে, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, লক্ষ্মীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘিনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ার চড়, রাওজান, ফটিকছড়ি, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় কিছু অপরাধী গোষ্ঠী ৫১টি মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা এ ধরনের কার্যকলাপের পেছনে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য থাকতে পারে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপরাধী চক্রের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে শুধু খাগড়াছড়িতেই ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি সচল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো বন্ধ রয়েছে ২৫টি টাওয়ার।
এ ছাড়া সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) পার্বত্য তিন জেলার অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে রবির মোবাইল টাওয়ারের সরঞ্জাম এভাবে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি ছাত্রদল ও মৈত্রীর
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
শুক্রবার ও শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে অপহৃতদের মুক্তির দাবি জানায় সংগঠন দুটি।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক চবির পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনা আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন করেছে। ছাত্র জীবনের স্বাভাবিক অবকাশ ও উৎসব শেষে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার পথে তাদের এভাবে অপহরণ নিঃসন্দেহে একটি ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনা। এটি শুধু পাহাড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে নয়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন নিয়েও বড় প্রশ্ন তৈরি করছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, শাখা ছাত্রদল এই সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর সুস্থ ও নিরাপদ মুক্তির দাবি করছে। একইসঙ্গে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, পাহাড়ে সক্রিয় সব সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
চবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “অপহরণকৃত শিক্ষার্থীদের দ্রুত মুক্তি কামনা করছি। পাশাপাশি পাহাড়ে সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সদস্য সাইদ্যুজামান রেদুয়ান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও অপহৃতদের এখনো উদ্ধার করতে না পারা সারাদেশের জন্য উদ্বেগজনক ও শঙ্কার বিষয়। চবির এ পাঁচজন শিক্ষার্থী ‘জেএসএস পিসিপি’র সদস্য হওয়ার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ‘ইউপিডিএফ’ তাদের অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে ইউপিডিএফ এর কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট বার্তার আহ্বান জানাই। অবিলম্বে অপহৃতদের অক্ষত মুক্তি ও রাষ্ট্রের কাছে অপহরণকারীদের শাস্তির দাবি জানায় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পাহাড়ে সুদীর্ঘ সময়ের নিপীড়নের ইতিহাস পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন ও সেখানকার রাজনৈতিক বাস্তবতাকে রীতিমতো শূলবিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সুদীর্ঘকাল ধরে পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে মেধাবী ও সাংগঠনিক মননকে হত্যা এবং দমনপীড়নের ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র ও তার সেনাবাহিনী। চবির পাঁচজন শিক্ষার্থীর অপহরণকেও রাষ্ট্রের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুলস’ রাজনীতির পরম্পরাই মনে করে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।
এর আগে, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বিজু উৎসব উদযাপন শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফন্টের (ইউপিডিএফ-প্রসীত গ্রুপ) নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, একই বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী