দেশের অন্যতম মোবাইল অপারেটর রবি বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনেক জায়গায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে রবির নেটওয়ার্কে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত তিন মাসে বিভিন্ন স্থানে দুর্বৃত্তরা রবির মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত টাওয়ার। নিরাপত্তাকর্মীদের হুমকি দেওয়া, অপহরণের ঘটনাও ঘটছে বলে জানিয়েছে রবি।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেছে রবি। নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রবি বলেছে, অপরাধী চক্র কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে অপহরণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে টাওয়ারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

রবি বলেছে, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, লক্ষ্মীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘিনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ার চড়, রাওজান, ফটিকছড়ি, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় কিছু অপরাধী গোষ্ঠী ৫১টি মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা এ ধরনের কার্যকলাপের পেছনে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য থাকতে পারে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপরাধী চক্রের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে শুধু খাগড়াছড়িতেই ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি সচল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো বন্ধ রয়েছে ২৫টি টাওয়ার।

এ ছাড়া সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) পার্বত্য তিন জেলার অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে রবির মোবাইল টাওয়ারের সরঞ্জাম এভাবে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণ, এরপর যা হলো

চট্টগ্রামে সড়কে গাড়ির গতিরোধ করে ‘বিত্তশালী’ ভেবে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর দাবি করা হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ। কিন্তু যাঁকে অপহরণ করা হয়েছে তাঁর দাবি, তিনি পেশায় দিনমজুর। মুক্তিপণের টাকা দিতে পারছিলেন না। বিষয়টি জানার পর অভিযানে নামে র‍্যাব।

অবশেষে র‍্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে দুই অপহরণকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার হাটহাজারীর নজুমিয়া হাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাঁরা হলেন মো. আজম ও আবু সামা। উদ্ধার করা হয় অপহরণের শিকার দিনমজুর নাজিম উদ্দিনকে। আজ শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায়।

র‌্যাব–৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃতকে অন্যত্র স্থানান্তর করার সময় একটি কারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনায় জড়িত দুজনকে। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

র‌্যাব ও পুলিশ সূত্র জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জীবিকার জন্য নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোহাম্মদনগর এলাকায় বসবাস করেন পরিবার নিয়ে। গত রোববার প্রতিদিনের মতো কাজের সন্ধানে বাসা থেকে বেরিয়ে জেলার ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরিফে যান। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শহরের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গাড়িতে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

হাটহাজারীর সরকার হাট বাজারে পৌঁছালে গ্রেপ্তার আজম ও তাঁর সহযোগীরা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে অপহরণ করে। এরপর সরকার হাট বাজারের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করেন। এগুলোর ছবি নাজিমের স্ত্রীর মুঠোফোনে ইমোতে দেন। সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় নাজিমের স্ত্রী নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

বিষয়টি র‌্যাব জানতে পেরে অপহরণকারীদের খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে গতকাল অপহৃতকে সরকার হাট থেকে নজুমিয়া হাট এলাকা দিয়ে অন্যত্র রাখার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় র‌্যাব হাতেনাতে ধরে ফেলে। আসামিদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপহৃত নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে তাঁকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার দিই। তখন অপহরণকারীরা গাড়িচোর বলে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রথমে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমার পেশা দিনমজুর বলা হলেও তারা বিশ্বাস করেনি। দিনমজুর বলার পর মারধরের পরিমাণও বেড়ে যায়। তারা মনে করেছিল আমি ব্যবসায়ী, টাকাওয়ালা।’

র‌্যাব জানায়, এ ঘটনায় এজাহার মিয়া নামের আরেকজন জড়িত। বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সহযোগী হিসেবে তিনি পরিচিত। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণ, এরপর যা হলো
  • টেকনাফে অপহরণ রোধে ব্যবস্থা নিতে সড়ক অবরোধ