রাজধানীর তুরাগে হা-মীম গ্রুপের কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ হত্যায় জড়িত অভিযোগে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাঁর নাম নূর নবী মিয়া (১৯)। তিনিও পেশায় গাড়িচালক। বুধবার বিকেলে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার হররাম উত্তরপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ফলগাছা থেকে গাড়িচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। 

র‌্যাব-১ এর সিপিসি-২ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিফ বিন হালিম সমকালকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তাদের তুরাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাব–১৩ আলাদা অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করে।

তুরাগ থানার ওসি রাহাত খান সমকালকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় গ্রেপ্তারকৃতরা একে অপরের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এর মধ্যে আর্থিক লেনদেনের একটি ঘটনা রয়েছে। নিহত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব থেকে তাঁর গাড়িচালক সাইফুলের হিসাবে ৩০ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করে নেওয়া হয়েছে। হত্যার সঙ্গে এ ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

নিহত আহসান উল্লাহ হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি রোববার বিকেলে প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করে নিজের প্রাইভেটকারে আশুলিয়া থেকে তুরাগের চন্ডালভোগের বাসায় ফিরছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সাইফুল। পথেই আহসানকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। পরে সাইফুল নিহতের বাসায় গাড়ি রেখে পালিয়ে যান। এর দুদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে কাশবন থেকে আহসানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই সাইফুলকে আসামি করে পল্লবী থানায় অপহরণ মামলা করেছিলেন নিহতের স্ত্রী লুৎফুন নাহার। লাশ পাওয়ার পর সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য গ র প ত র কর আহস ন

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদি আরবে অপহরণ করে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়, মাগুরা থেকে একজন গ্রেপ্তার

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. রাসেলকে আটকে রেখে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে পাঁচ দিন পর গত ১৭ জানুয়ারি সেখানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি রিয়াদে ব্যবসা করতেন। অপহরণে জড়িত অভিযোগে গতকাল বুধবার মাগুরা থেকে অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত জিয়াউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বুধবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। আগে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সকালে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা পরিকল্পিতভাবে রাসেলকে সৌদি আরবের রিয়াদ শহর থেকে অপহরণ করে। পরে রাসেলের বড় ভাই ঢাকার বাড্ডার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের কাছে একটি ইমো আইডি থেকে ও ভিওআইপির মাধ্যমে ফোন করে রাসেলের জন্য ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা দেওয়া না হলে রাসেলের ক্ষতি করাসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। অপহরণকারীরা মুক্তিপণের অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশের কয়েকটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের নম্বর এবং বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব নম্বর দেয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাইফুলসহ স্বজনেরা উপায়ন্তর না পেয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের মুক্তিপণ দিতে রাজি হন। সাইফুল ইসলাম খিলগাঁও ঝিলপাড় এলাকা থেকে বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের নম্বরে ধাপে ধাপে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং অপহরণকারীদের দেওয়া ব্যাংক হিসাবে মোট ২৫ লাখ টাকা পাঠান। মোট ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ পেয়ে রাসেলকে ১৭ জানুয়ারি সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। চলে যাওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা আসামিরা রাসেলের হাতের ছাপ এবং আকামা আইডি নিজেদের হেফাজতে নেয়। অপহরণের ঘটনা ফাঁস হলে রাসেলকে খুন করা হবে বলে ভয়ভীতি দেখান অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। পরে রিয়াদের স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপদ স্থানে গিয়ে রাসেল পরিবারকে সব খুলে বলেন। রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে থাকছেন এবং সেখানে ব্যবসা করছেন। গত ২১ জানুয়ারি রাসেলের শ্বশুর বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামলার তদন্তে জানা যায়, অপহরণকারীরা যেসব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নম্বর ও ব্যাংকের হিসাব নম্বর অপহৃতের স্বজনদের দিয়েছিল, সেগুলোর তথ্যাদি পর্যালোচনা করে মো. জিয়াউর রহমান (৪২) নামের একজনের তথ্য পায় সিআইডি। গ্রেপ্তার জিয়াউর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি কর্মকর্তাদের বলেছেন, সৌদি আরবে অবস্থানরত অপহরণকারীদের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে এই কাজে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পেয়েছেন তিনি।

সিআইডির কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, মামলাটি বর্তমানে সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে। গ্রেপ্তার জিয়াউর রহমানকে রিমান্ডের আবেদনসহ পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদ্‌ঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাইজেরিয়ায় স্কুল থেকে ২২৭ শিক্ষার্থী ও কর্মী অপহরণ
  • সৌদি আরবে অপহরণ করে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়, মাগুরা থেকে একজন গ্রেপ্তার
  • বেবি’স ডে আউট: বাস্তবে একটি শিশুর চরিত্রে দুই শিশু ছিল