উত্তরখানে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
Published: 28th, March 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরখানে গ্যাসের লাইন লিকেজের আগুনে দগ্ধ এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন স্বামী ময়নুল (৪০) ও স্ত্রী আনোয়ারা (৩২)। ময়নুল পেশায় রিকশাচালক ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
স্থানীয়রা জানান, এই দম্পতি উত্তরখানের ভূইয়াবাড়ি বাঁশতলায় একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন। রাত ১২টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন লাইটার দিয়ে মশার কয়েল জ্বালানোর সময় আগুনে তাঁরা দগ্ধ হন। তাঁদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে পানি দিয়ে আগুন নেভান। পরে দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থলের পাশের সড়কে সিটি করপোরেশনের কাজ চলছিল। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার সময় ওই বাসার গ্যাসের লাইন ফেটে যায়। গত কয়েক দিন ধরেই ফেটে যাওয়া লাইন থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। ঠিকাদারকে এ বিষয়ে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। সেখান থেকেই গ্যাস লিকেজ হয়েছে। পরে বুধবার রাতেই ফায়ার সার্ভিস এসে পুলিশের উপস্থিতিতে গ্যাস লাইনের লিকেজ বন্ধ করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারে এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত ছাত্রদল কর্মীর নাম গাজী তাহমিদ খান (২০)। তিনি উপজেলার উত্তর হিঙ্গুলী এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, নিহত তাহমিদ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের জোরারগঞ্জ থানার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। পরে তিনি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন মিরসরাই উপজেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিবের দায়িত্ব নেন। সম্প্রতি তিনি বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বিএনপির বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে তিনি যেতেন।
গতকাল সন্ধ্যায় বারইয়ারহাট দক্ষিণ পৌর বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ছাত্রদলের উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল হয়। এ মাহফিলে তাহমিদ অংশ নেন। মাহফিল শেষে কথা-কাটাকাটি থেকে পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি দিদারুল আলম মিয়াজির অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় এক পক্ষের ছুরিকাঘাতে তাহমিদ খান গুরুতর আহত হন।
পরে তাহমিদকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। একই সংঘর্ষের ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জানতে চাইলে বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি দিদারুল আলম নিয়াজী প্রথম আলোকে বলেন, তাহমিদ আমাদের সব মিটিং মিছিলে থাকতেন। তবে এটি দলীয় কোনো ব্যাপার নয়, ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে তিনি খুন হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
দিদারুল আলম নিয়াজী এলাকায় মিরসরাই সংসদীয় আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিনের (চেয়ারম্যান) অনুসারী হিসেবে পরিচিত। জানতে চাইলে নুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাহমিদ হত্যাকাণ্ড বিএনপির অন্তঃকোন্দল বা দলীয় কোনো বিষয় নয়। আমাদের এক কর্মীর পা তুলে বসা নিয়ে বারইয়ারহাট পৌর বাজারের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ও বিএনপির নেতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ বাগ্বিতণ্ডা থেকেই দুটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ গড়ায়। সে সংঘর্ষে তাহমিদ নিহত হয়। কিছুদিন আগে ছেলেটি ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হতে আমার কাছে এসেছিল। আমি তাকে দিদারুল আলম মিয়াজির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক বলেন, ‘গতকাল বিএনপির কিছু নেতা–কর্মীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে দু-একজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছিলাম। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাহমিদ নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে আমরা দেখছি।’