রাজধানীর উত্তরখানে গ‍্যাসের লাইন লিকেজের আগুনে দগ্ধ এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহতরা হলেন স্বামী ময়নুল (৪০) ও স্ত্রী আনোয়ারা (৩২)। ময়নুল পেশায় রিকশাচালক ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ওই দম্পতি দগ্ধ হন। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে একজন আর রাত ১০টার পরে অপরজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, এই দম্পতি উত্তরখানের ভূইয়াবাড়ি বাঁশতলায় একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন। রাত ১২টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন লাইটার দিয়ে মশার কয়েল জ্বালানোর সময় আগুনে তাঁরা দগ্ধ হন। তাঁদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে পানি দিয়ে আগুন নেভান। পরে দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থলের পাশের সড়কে সিটি করপোরেশনের কাজ চলছিল। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার সময় ওই বাসার গ্যাসের লাইন ফেটে যায়। গত কয়েক দিন ধরেই ফেটে যাওয়া লাইন থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। ঠিকাদারকে এ বিষয়ে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। সেখান থেকেই গ‍্যাস লিকেজ হয়েছে। পরে বুধবার রাতেই ফায়ার সার্ভিস এসে পুলিশের উপস্থিতিতে গ‍্যাস লাইনের লিকেজ বন্ধ করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান ইসলামী ফ্রন্টের

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। একইস‌ঙ্গে নির্বাচন ক‌মিশন‌কে গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে দল‌টি।

তফ‌সিল ঘোষণার পর তাৎক্ষ‌ণিক প্রতি‌ক্রিয়ায় বৃহস্প‌তিবার (১১ ডিসেম্বর) ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন ও মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ এক বিবৃ‌তি‌তে ব‌লেন, দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা ও সাংবিধানিক অগ্রযাত্রাকে সুসংহত করার জন্য এই তফসিল ঘোষণার কোনো বিকল্প ছিল না। নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হওয়া রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, অর্থনীতির গতি ও জনগণের মৌলিক অধিকারকে সুরক্ষিত করে। 

আরো পড়ুন:

বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: ‘তফসিল হয়েছে, তবে সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’

অসত্য তথ্য ছড়ানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ: সিইসি

‍আমরা মনে করি, এ তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে জাতি আগামী দিনের নেতৃত্ব গঠনের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করল। 

ই‌সিকে উ‌দ্দেশ‌্য ক‌রে দল‌টির নেতারা বিবৃতিতে ব‌লেন,  “আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই যে, অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেশের মানুষের দাবি— এটিই জাতীয় স্বার্থ। তাই নির্বাচন কমিশনকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে কঠোর ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। কোনো প্রকার সহিংসতা, নাশকতা, রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতা বা নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা বরদাস্ত করা যাবে না।”

“জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি অন্তবর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন, যেখানে প্রতিটি প্রার্থী সমান সুযোগ পাবেন এবং জনগণ নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন, বিবৃতিতে ব‌লেন তারা। 

দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নির্বাচনি মাঠে শৃঙ্খলা, সৌজন্য, রাজনৈতিক পরিপক্বতা এবং ইসলামী মূল্যবোধ অনুসরণ করতে হবে। জনগণের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায় ও নৈতিকতার রাজনীতির বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। কোনো উস্কানি, সংঘাত বা অসাংবিধানিক আচরণ যেন ইসলামী ফ্রন্টের কর্মীদের কাজে না আসে— এ বিষয়ে আমরা কঠোরভাবে সতর্ক করছি।”

“এই দেশ আমাদের, ভবিষ্যৎ আমাদের সন্তানের। সুতরাং দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে সবাইকে ভোটের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে হবে। আসুন, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ ইংরেজি একটি শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন উপহার দিয়ে জাতিকে নতুন প্রত্যয়ের পথে এগিয়ে নিতে চাই", প্রত‌্যাশা রা‌খেন দল‌টির দুই শীর্ষ‌নেতা। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ