দুই মাস পর অনুষ্ঠেয় আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) ফাইনালের আগে আবারও চোটে পড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। কনুইয়ের পুরনো চোট ফিরে আসায় তিনি মিস করছেন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ফাইনাল। যেটি আজ শুরু হয়েছে জোহানেসবার্গে।

বাভুমার লায়ন্স দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু তিনি জোহানেসবার্গে আসেননি। জানা গেছে, বুধবার রাতেই নিশ্চিত হয় যে কনুইয়ের অস্বস্তির কারণে তিনি ফাইনালে খেলতে পারছেন না। এই খবর লায়ন্স টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত। কারণ, ম্যাচের আগের দিনই লায়ন্স অধিনায়ক ডোমিনিক হেনড্রিকস সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন যে, তিনি বাভুমার সঙ্গে খেলতে মুখিয়ে আছেন।

তবে বাভুমার কোন কনুইতে চোট লেগেছে কিংবা তা কতটা গুরুতর সেই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি।

আরো পড়ুন:

রেকর্ড জয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু বাংলাদেশের

১২৮ বছর পর ক্রিকেট ফিরছে অলিম্পিকে: ৬টি করে দল পুরুষ ও নারী বিভাগে

এর আগেও ২০২২ সালে বাম কনুই ভেঙে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন বাভুমা। ফলে ইংল্যান্ড সফরেও খেলতে পারেননি। এরপর আবুধাবিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে দৌড়াতে গিয়ে আবারও কনুইতে ব্যথা পান। যে কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও মিস করেন। পুরো ঘরোয়া মৌসুমে কোনো লাল বলের ম্যাচ খেলতে পারেননি এবং মানসিকভাবে অনেক চাপে ছিলেন। এক পর্যায়ে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতেও ভোগেন।

তবে সবকিছু পেছনে ফেলে দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছেন বাভুমা। ঘরের মাঠে চারটি টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি ও চারটি ফিফটি করে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও দলকে নিয়ে গেছেন সেমিফাইনালে। যদিও পুরো মৌসুমেই তার কনুইয়ে মোটা ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি বাভুমা। তবে লায়ন্স দলের শেষ লিগ ম্যাচে তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন। যদিও বৃষ্টিতে পুরো ম্যাচই ভেসে যায়। এরপর কেপটাউনে ফিরে যান এবং ফাইনালের জন্য ফেরার কথা থাকলেও ইনজুরির কারণে ফেরা হচ্ছে না তার।

দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে এখনো ফাইনালের আগে আট সপ্তাহের মতো সময় আছে। ১১ জুন, লন্ডনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনো সিরিজ নেই। বেশ কিছু খেলোয়াড় আইপিএল এবং কাউন্টি ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকলেও বাভুমার কোনো বিদেশি লিগে খেলার চুক্তি নেই। তাই এই ফাইনালই ছিল তার জন্য মৌসুমের শেষ ম্যাচ। কিন্তু নতুন এই ইনজুরি আপাতত সে পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে।

তবে আশার কথা, সম্প্রতি প্রকাশিত ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায় নাম রয়েছে বাভুমার।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল র ইনজ র

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়

রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।

গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।

আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।

সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়