কক্সবাজারে ৭০০ একর বনভূমিতে, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিজিটাল পার্ক স্থাপনের যেই আয়োজন চলিতেছে, উহা শুধু উদ্বেগজনক নহে, হতাশাজনকও বটে। কারণ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পূর্বপার্শ্বে ঝিলংজা মৌজার এই বনে রহিয়াছে ৫৮ প্রজাতির দুর্লভ বৃক্ষ এবং বিপন্ন হস্তী, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর বাস। তাই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলিতেছে, ১৯৯৯ সালে এই ঝিলংজা মৌজার বনভূমিসহ কক্সবাজার সদর ও সমুদ্রসৈকতকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুসারে তথায় কোনো প্রকার অবকাঠামো নির্মাণ, প্রতিবেশ-পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো তৎপরতা পরিচালনা নিষিদ্ধ। ইহা হতাশাজনক কারণ, যেই স্থানে ‘কক্সবাজার জিয়াউর রহমান ডিজিটাল পার্ক’ স্থাপনের জন্য বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করিয়াছে বি-কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামে এক প্রতিষ্ঠান, সেই ৭০০ একর বনভূমি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ স্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নামে বন্দোবস্ত দিয়াছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। পরিবেশ সচেতন মানুষদের উত্তরোত্তর দাবির মুখে সেই বরাদ্দ সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ভূমি মন্ত্রণালয় বাতিল করিয়াছে। সেই আবেদনপত্র বন অধিদপ্তর তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করিতে পারিত। তাহা না করিয়া আবেদনপত্রটি প্রেরণ করা হইয়াছে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কার্যালয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামত প্রদানের নির্দেশনাসহ। প্রসঙ্গত, ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার এলাকাটিকে ‘রক্ষিত বন’ ঘোষণা করে। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমির ইজারা প্রদান করা-না করার এখতিয়ার শুধু বন বিভাগের। তদুপরি সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার বন সংরক্ষণে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মত, একটা দেশে পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অন্তত ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা আবশ্যক। অথচ বাংলাদেশে মাত্র ৮-৯ শতাংশ বনভূমি বিদ্যমান। বনভূমির ধ্বংস বন্ধ না হইলে হয়তো অচিরেই সেই দিন সমুপস্থিত হইবে যখন বন বলিয়া কিছুই এই দেশে থাকিবে না। বনে শুধু বৃক্ষই নয়, অজস্র প্রকার প্রাণী ও অণুজীব থাকে। বন ধ্বংসের অর্থ এই সকল জীব-অণুজীবেরও বিলোপ সাধন। স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে ইহাদের সহিত নিবিড় সম্পর্কে আবদ্ধ কৃষি ও শিল্প উৎপাদনও বিপন্ন দশায় পতিত হইবে। তখন এই ভূখণ্ডে মানুষেরও অস্তিত্ব বজায় রাখা দুরূহ হইবে। এই প্রেক্ষাপটে স্বীকার করিতে হইবে, নূতন করিয়া বনভূমি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বন্দোবস্ত প্রদান জনস্বার্থবিরোধী। আমরা জানি, মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এহেন অপকর্মে লিপ্ত। বিগত সরকার এবং তাহার পূর্বসূরিদের সময়ে এই সকল অপকর্ম সংঘটনের ভূরি ভূরি প্রমাণ রহিয়াছে। বনভূমির মূল্য সেই সরকারসমূহের নিকট নিছক ভূমি ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। পরিবেশ সচেতন মহলের চাপে তাহারা বিভিন্ন সময় বন সুরক্ষার গুরুত্ব স্বীকার করিত বটে, বাস্তবে উহার প্রকাশ তেমন ছিল না। ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষমতায় টিকিয়া থাকিতে তাহারা বনভূমি ইজারা সংক্রান্ত রাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংস্থাসমূহেরও অন্যায় আবদার রক্ষা করিয়াছে। দুঃখজনক হইল, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়া এহেন আপদও বন্ধ হইবার কথা ছিল, যাহা বাস্তবে দৃশ্যমান নহে। রাজনৈতিকভাবে আশীর্বাদপুষ্ট মহল বন ধ্বংসের আয়োজনে লিপ্ত।
আমরা মনে করি, চলমান পরিস্থিতি বদলাইতে হইলে দেশের নীতিনির্ধারকগণের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ লইতে হইবে। আলোচ্য বনভূমি ইজারা প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধের মধ্য দিয়া তাহারা সদিচ্ছার প্রমাণ রাখিতে পারেন। বনখেকোদের জন্য রাজনৈতিক আশীর্বাদ বন্ধ, তৎসহিত বন বিভাগকেও পুনর্বিন্যাস করিতে হইবে বলিয়া আমরা মনে করি। সচেতন মানুষদের এই বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে উচ্চকণ্ঠ থাকিবার কোনো বিকল্প নাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব শ অন য য় র জন য সরক র বনভ ম
এছাড়াও পড়ুন:
আর্মি নার্সিং কলেজে চাকরির সুযোগ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রংপুর ক্যান্টনমেন্টের আর্মি নার্সিং কলেজে চারটি পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫।
পদের নাম ও বিবরণ১. লেকচারার
পদসংখ্যা: ২
শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা: বিএনএমসির নীতিমালা অনুযায়ী স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএসসি ইন নার্সিং ডিগ্রি এবং মাস্টার্স ইন নার্সিং/এমপিএইচ অথবা নার্সিং রিলেটেড ফিল্ডে মাস্টার্স ডিগ্রি থাকতে হবে।
আরও পড়ুনপরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২৭ পদের চাকরি পেতে আর কত অপেক্ষা৬ ঘণ্টা আগে২. নিরাপত্তা প্রহরী
পদসংখ্যা: ২
শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি পাস। অভিজ্ঞ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বয়সসীমাঅনূর্ধ্ব–৩৫ বছর।
বেতন–ভাতা
কলেজের বেতনকাঠামো অনুযায়ী।
আরও পড়ুনসকালের অ্যালার্ম, না ফোনভীতি? জেন–জিরা কর্মজীবনের চ্যালেঞ্জ জয় করবেন যেভাবে৪ ঘণ্টা আগেআবেদনের নিয়মঅধ্যক্ষ, আমি নার্সিং কলেজ, রংপুর, রংপুর সেনানিবাস—ঠিকানায় ডাকযোগে অথবা ব্যক্তিগতভাবে আবেদনপত্র ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে হবে। আবেদনপত্র কম্পিউটারে টাইপ করতে হবে।
আবেদন ফি১ নম্বর পদের পরীক্ষার ফি ১,০০০ টাকা ও ২ নম্বর পদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা। ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডার করতে হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
আরও পড়ুনসরকারি আবাসন পরিদপ্তরে নিয়োগ, পদ ৮১০৪ ডিসেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুই ধাপের লিখিত পরীক্ষা ২ জানুয়ারি১০ ডিসেম্বর ২০২৫