সীমান্তের ইছামতি নদীতে ভাসছে যুবকের লাশ
Published: 11th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তের ইছামতি নদীতে এক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখা গেছে। সীমান্তের হুদাপাড়া গ্রামের ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত লাশটি ভাসতে দেখার কথা জানান স্থানীয়রা।
লাশটি নদীর যে অংশে রয়েছে সেটি ভারতের নদীয়া জেলার ধানতলা থানার হাবাসপুর এলাকা।
এলাকাবাসী জানান, আজ দুপুরের পর হুদাপাড়া গ্রামের এক কৃষক নদীর পাড়ের মাঠে যান। এসময় তিনি নদীতে লাশ ভাসতে দেখেন। পরে বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে লাশের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। লাশ নদীতে ভাসতে থাকায় তার নাম বা পরিচয় জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ৩ জনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার, আটক ১
রাজশাহীতে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
এলাকাবাসীর ধারণা, ওই যুবক বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন। তার বাড়ি মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসিপাড়ায় হতে পারে। তারা মনে করছেন, তিনদিন আগে বাঘাডাঙার ওয়াসিমসহ আরো তিনজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বিএসএফ তাদের ধাওয়া করে। বিএসএফের হাতে আটক হন ওয়াসিম আলী।
এ বিষয়ে জানতে খালিশপুর ৫৮ বিজিবি’র পরিচালক রফিকুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, “ইছামতী নদীর ভারতীয় অংশে একটি লাশ পড়ে আছে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি কাজ করছে। নিয়মানুযায়ী এ ধরণের ঘটনায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবি যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কাজেই বিজিবি কোনো কিছু না জানানো পর্যন্ত আমরা কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারব না। বিজিবির কাছ থেকে চূড়ান্ত তথ্য পাওয়ার পরে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস