দাবি আদায়ে অনড় কুয়েট শিক্ষার্থীরা, সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা
Published: 14th, April 2025 GMT
হল খুলে দেওয়ার দাবিতে অনঢ় অবস্থানে রয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন ২০-২৫ শিক্ষার্থী। এখনো সেখানে অবস্থান করছেন তারা। দাবি আদায় না পর্যন্ত তাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানিয়েছেন। তবে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের দাবি ও উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক রাজু আহমেদ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রবিবার রাত থেকে প্রশাসনিক ভবনের বাথরুম তালাবদ্ধ করে রাখে। যে কারণে আমাদেকে পার্শ্ববর্তী ভবনের বাথরুম ব্যবহার করতে হচ্ছে। খাওয়া-দাওয়া এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে পরবর্তীতে ঢুকতে নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছেন। সকালে অনেক শিক্ষার্থী ভিতরে ঢুকতে চাইলে তাদের নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করেন। পরে তাদের আর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীরা আক্ষেপ করে বলেন, দুঃখের বিষয় এ বছর বাংলা নববর্ষের দিন বিশ্ববিদ্যালয় হল খোলার দাবিতে আমাদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কাটাতে হলো। আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক রাজু আহমেদ এসে আমাদেরকে জানিয়েছেন সন্ধ্যা ৭ টায় সিন্ডিকেটের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
তারা আরো বলেন, সভার এজেন্ডা সম্পর্কে আমাদের তিনি কিছু জানাননি। তবে তিনি আমাদেরকে অবস্থান থেকে চলে যেতে অনুরোধ করেন। আমরা সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানার পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।
কুয়েট শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়াসহ তাদের দাবির স্বপক্ষে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একাত্মতা প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই খুলনা আলিয়া মাদ্রাসাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে সহমত পোষণ করেছেন।
এর আগে, রবিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ৩টায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এরপর তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। বিকালে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায়।
তারা হলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য রাত ৮ টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষ তাদের সে দাবি মেনে না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাত্রিযাপন করেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।