জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে নওগাঁয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বেলা ১১টায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে থামে। পরে শিক্ষার্থীরা নওগাঁ-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে সড়কটি অবরোধ করে। সড়কে অবস্থান নিয়ে সেখানেই করেন প্রতিবাদ সমাবেশ। এতে বন্ধ হয়ে গেছে নওগাঁ-বগুড়া-ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে নওগাঁর যানচলাচল। দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট। ফলে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন দূর পাল্লার যাত্রীরা। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এসে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও তাদের কথায় আশ্বস্ত না হয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিতর্কিত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ বাতিল, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের সময়সীমা বৃদ্ধি, উপসহকারী প্রকৌশলী পদে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের একক সুযোগ, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংস্কার, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দক্ষ জনবল নিয়োগসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল টেকনোলজি বিভাগের সপ্তম পর্বের শিক্ষার্থী তোবেয়া আলম বলেন, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ডের না, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ল্যাবের সহকারী কর্মচারী। তারা মূলত অষ্টম শ্রেণি কিংবা এসএসসি পাস। তাদের ডিপ্লোমার শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই। তারা যদি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হন, তাহলে ডিপ্লোমা ছাত্ররা কতটুকু শিখবে। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর শুধুমাত্র ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টদের জন্য। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত কারিগরি সেক্টর ধ্বংসের পাঁয়তারা। দ্রুত তাদের এই নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার টেকনোলজি বিভাগের সপ্তম পর্বের শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন, ২০২১ সালে নন টেকনিক্যাল থেকে বিতর্কিত ভাবে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা শুধু ল্যাবের লাইট ফ্যানের সুইজ বন্ধ করা ছাড়া কিছুই করতে পারে না। একটি রায়ের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ নন টেকনিক্যাল ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি আমাদের সঙ্গে এক প্রকারের বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের দাবি যেন দ্রুত ই বাস্তবায়ন করা হয়।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছি। দূরপাল্লার যানবাহন গুলোকে বিকল্প সড়ক দিয়ে গন্তব্য স্থলে পাঠানো হচ্ছে।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নওগ সড়ক অবর ধ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ