রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলে নেতাকর্মীরা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুই শিফটে 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে সংগঠন দুটির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সহযোগিতা কার্যক্রমে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শাখা শিবিরের নেতাকর্মীরা ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বর, আম চত্বর, কিউব চত্বর, প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন স্থানে সহয়তা বুথ স্থাপন করেছেন। এ বুধ থেকে তারা খাবার পানি সরবরাহ, ফার্স্ট এইড, মেডিসিন সরবরাহ, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, শিক্ষা উপকরণ দেওয়াসহ আগত ভর্তিচ্ছুদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন।

আরো পড়ুন:

রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বন্ধুর ফোনে পাঠাতে গিয়ে আটক

ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিল রাবি 

ভর্তি পরীক্ষার্থী ফারহানা আক্তার বলেন, “আমি এই বিশাল ক্যাম্পাসে এসে একটু দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রশিবিরের ভাইয়েরা যেভাবে সাহায্য করেছে, তাতে আমি সহজেই কেন্দ্রে পৌঁছাতে পেরেছি। তাদের সহায়তায় আমি অনেক স্বস্তি পেয়েছি।”

আরেক পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রথমে এতো বড় ক্যাম্পাসে এসে কিছুটা বিভ্রান্ত হই। শিবিরের দেওয়া সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা পেয়ে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। তাদের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”

শাখা ছাত্রশিবিরের স্পোর্টস সম্পাদক মো.

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “পরীক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে ক্যাম্পাসে পৌঁছানো, সঠিক ভবনে পরীক্ষার হল খুঁজে পাওয়া, খাবার পানি সরবরাহ, ফার্স্ট এইড, মেডিসিন সরবরাহ, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও শিক্ষা উপকরণ দেওয়াসহ নানা রকম সাহায্য করেছে ছাত্রশিবির।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্টে তারা তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করে আগত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়াও, অভিভাবকদের বসার জন্য শেড, শিশুদের জন্য চকলেটসহ রিডিং কর্নার স্থাপন করা হয়েছিল।”

অন্যদিকে, ভর্তিচ্ছুদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে ‘জরুরি বাইক সার্ভিস’ চালু করেছে রাবি শাখা ছাত্রদল।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে সঠিক কেন্দ্রে পৌঁছাতে বেশ খানিকটা সময় লাগে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের। অনেক সময় পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজ কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন না পরীক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদের এই সংকট কাটাতে ছাত্রদলের এই আয়োজনের প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থী আবির মাহমুদ বলেন, “তারা খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে। আমি একা প্রথম রাজশাহীতে আসছি, কিছুই চিনি না। ভাইদের বলার পর তারা আমাকে যে ভবনে পরীক্ষা, সেখানে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যারা কেন্দ্র চিনে না, তাদের জন্য এটা খুবই হেল্পফুল।”

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বাইক সার্ভিসের বাইকগুলো প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছে। এখানে সর্বমোট ১১টি বাইক কাজ করছে। বাইক সার্ভিসের তত্ত্বাবধানে রয়েছে ছাত্রদলের কর্মী নাহিউল জীবন। এছাড়াও আমাদের মেডিকেল সেবা, ট্রাফিক সেবা, খাবার পানি, স্যালাইন, শিক্ষার্থীদের তথ্যসেবা,অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। রাবি ছাত্রদল সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে আছে।”

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল বা স্বেচ্ছাসেবী দল শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় কাজ করবে, ততক্ষণ আমি তাদের প্রশংসা করবো। তারা যে মিটিং মিছিল বাদ দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কাজ করছে, এটা সত্যি প্রশংসনীয়।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র থ ভর ত চ ছ ছ ত রদল সহয গ ত সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল

সাইপ্রাসে গত সপ্তাহে উন্নতমানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহ করেছে ইসরায়েল। গত ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার তৃতীয় চালান এটি। তুরস্কের সঙ্গে ক্রমে উত্তেজনা বেড়ে চলার মধ্যে সাইপ্রাসকে এ ব্যবস্থায় সজ্জিত করল ইসরায়েল। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, লিমাসলের বন্দর দিয়ে একটি ট্রাক ‘বারাক এমএক্স’ ব্যবস্থার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

সাইপ্রাসের সংবাদমাধ্যম রিপোর্টার জানিয়েছে, বারাক এমএক্স ব্যবস্থার সরবরাহ এখন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরই এটি আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) বহিঃসম্পর্ক বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়। বারাক এমএক্স তৈরি করেছে ইসরায়েলি সংস্থাটি।

আরও পড়ুনইসরায়েলের আগ্রাসন কীভাবে মোকাবিলা করবে তুরস্ক৩০ আগস্ট ২০২৫

গাল লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সমন্বয় করে এ দ্বীপের উত্তর অংশ মুক্ত করার বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। এতে তুরস্কের পুনরায় সেনা পাঠানোর পথ বন্ধ হবে, উত্তর সাইপ্রাসের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হবে, গোয়েন্দা ও কমান্ড সেন্টারগুলো গুঁড়িয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত তুর্কি বাহিনী সরে যাবে। এর মাধ্যমে সাইপ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

গ্রিসের সঙ্গে একীভূত করার লক্ষ্য নিয়ে সাইপ্রাসে এক অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে সেখানে আক্রমণ চালায় তুরস্ক। সেই থেকে দ্বীপটি দুই ভাগে বিভক্ত—দক্ষিণে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র ও উত্তরে তুরস্ক-সমর্থিত উত্তর সাইপ্রাস, যা শুধু আঙ্কারার স্বীকৃত।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়।

এখন পর্যন্ত আঙ্কারা নতুন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বারাক এমএক্সে রয়েছে উন্নত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা। এর থ্রিডি রাডার সর্বোচ্চ ৪৬০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর, যা দক্ষিণ তুরস্কের একটি বড় অংশের আকাশসীমা আয়ত্তে আনতে পারে।

আরও পড়ুনইসরায়েল ও তুরস্ক কখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে?২৪ জানুয়ারি ২০২৫

১৯৯৭ সালে দক্ষিণ সাইপ্রাস রাশিয়ার তৈরি দুটি এস–৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার চেষ্টা করলে তুরস্কের সঙ্গে তার যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়। সে সময় আঙ্কারা পুরোদমে সামরিক জবাব দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে সে সংকট মেটে গ্রিস ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে গেলে ও সাইপ্রাস বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করলে।

এ ব্যবস্থা এস-৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস-৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।আরদা মেভলুতোগলু, তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক

তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আরদা মেভলুতোগলু বলেন, এই ব্যবস্থা এস–৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস–৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।

ইসরায়েলের আশদোদে আইএআই বারাক এমএক্স বিমান প্রতিরক্ষা লঞ্চার। ১২ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহ শুরু করেছে ইসি
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে