খাগড়াছড়িতে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার সকালে ‘আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ ব্যানারে খাগড়াছড়ি শহরে এই মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে একই সঙ্গে রাঙামাটির কাউখালীতে এক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অভিযোগ করে এর বিচার দাবি করা হয়েছে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি শহরের মহাজনপাড়া সূর্য শিখা ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শাপলা চত্বর হয়ে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সামনে শেষ হয়েছে। পরে সেখানে সড়কের ওপর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার ও কাউখালীর ঘটনার বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তুষন চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রহেল চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের খাগড়াছড়ি সদর থানা শাখার সভাপতি আকাশ ত্রিপুরা, পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা, বাংলাদেশে মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উক্যানু মারমা, শিক্ষার্থী সুমতি বিকাশ চাকমা, মায়া চৌধুরী প্রমুখ।

সমাবেশে পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ইউপিডিএফকে দায়ী করে বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছে। চার দিন পার হয়ে গেলেও এসব শিক্ষার্থীর খোঁজ মিলছে না। তাঁদের উদ্ধারে প্রশাসনও ব্যর্থ।

অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির কুকিছড়া থেকে অটোরিকশায় সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক এক জায়গায় শিক্ষার্থীদের গাড়ি আটকানো হয়। এরপর গাড়ির চালক ও পাঁচ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে অপহরণকারীরা চালককে ছেড়ে দিলেও পাঁচ শিক্ষার্থীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, ‘অপহরণের সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি আমাদের দল করে না। আমরা শুরু থেকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের বিপক্ষে।’

খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মো.

আরেফিন জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনগুলো বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপহ ত

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।

উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।

পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার