সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেনের নামে গুলশানে থাকা একটি ফ্ল্যাট, গ্যারেজ ও কমন স্পেস জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদকের পক্ষে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম এসব সম্পদ ক্রোক চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, তারিন হোসেনের নামে মোট ১০ কোটি ৩২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৮ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

তদন্তে জানা যায়, গুলশান আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠা ৩ ছটাক জমির ওপর নির্মিত দ্য সেরেনিটি নামে দুটি বেজমেন্টসহ ১৩ তলা আবাসিক ভবনের সাত তলার (একটি গ্যারেজ ও কমন স্পেসসহ) ৫ হাজার ১৭২ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট ও অচিহ্নিত ১৭০ অযুতাংশ ভূমি রয়েছে নিক্সন চৌধুরীর। এই সম্পদ ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি অ্যালটমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী নিক্সন চৌধুরীর প্রথম স্ত্রী মুনতারিন মুজিব চৌধুরীর নামে করা হয়। পরে প্রথম স্ত্রী মারা গেলে দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে ফ্ল্যাটটি নিবন্ধন করা হয়, যা নিক্সন চৌধুরী অবৈধ অর্থ দিয়ে কেনেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভারত-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা ৩৫-৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে’

শেখ হাসিনা পরবর্তী সময়ে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতে এবং সম্পর্কের শীতল বরফ ভাঙতে ‘বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’ এবং ‘পর্যটন বিনিময়কে’ কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশ।  এমনকি, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা ৩৫-৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। বুধবার কলকাতায় বণিক সভা ‘মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টিজ’ (এমসিসিআই) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ। 

এমসিসিআই-এর সদস্যদের সাথে মতবিনিময়কালে, হামিদুল্লাহ প্রত্যাশা করে বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে যখন উভয় পক্ষই পরবর্তী পর্যায়ের বিষয়ে মূল্যায়ন করছে, ঠিক এমন এক সময়ে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সতেজ করতে সাংস্কৃতিক ও জনকেন্দ্রিক বিনিময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেদিকে তাকিয়ে দিল্লিতে একটি ‘বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজনের জন্য আলোচনা চলছে। যদিও এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। 

আরো পড়ুন:

ভারতে হামলার ছক, দুই বাংলাদেশিসহ ৫ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বিজয়ের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে যা বললেন রাশমিকা

বণিক সভার সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময়, ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে পর্যটকদের আগমন যাতে বৃদ্ধি পায়, সেবিষয়েও উৎসাহিত করেন হাইকমিশনার। 

গত আট মাস ধরে দিল্লিতে কর্মরত হামিদুল্লাহর অভিমত, ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব মূলত একটি ‘খাঁটি আত্মিক সম্পর্ক’, পারস্পরিক সম্পর্ক ও বিশ্বাসের উপর গড়ে ওঠা সম্পর্ক। এই সম্পর্কটি সভ্যতার বন্ধন এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে গঠিত একইরকম সামাজিক অবস্থার উপর নিহিত। 

তার যুক্তি, অর্থনৈতিক সম্পর্ককে ব্যাপকভাবে অবমূল্যায়ন করা হয় কারণ এর পিছনে একমাত্র দুই দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনটাকেই ধরা হয়ে থাকে। ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্য ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা তার বেশি। কিন্তু চিকিৎসা পর্যটন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় পেশাদার এবং ভারতে অধ্যায়নরত কয়েক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করলে প্রকৃত সম্পৃক্ততা অনেক বেশি হবে। সেক্ষেত্রে এটা ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি হওয়া উচিত। কোথাও কোথাও ৩৫ থেকে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। 

স্পর্শকাতর  কিছু দ্বিপাক্ষিক বিষয় থাকলেও দুদেশ আগামীতে যৌথ ভবিষ্যতের ধারণার দিকে অগ্রসর হতে পারবে বলে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেছেন।

হামিদুল্লাহ বলেন, উভয় দেশ যখন তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি সংবেদনশীল পর্যায়ে পাড়ি দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশ সম্পৃক্ততার পরিধি প্রসারিত করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। আর সেই কারণেই সাংস্কৃতিক কূটনীতি, পর্যটন সুবিধা প্রদান, গভীর অর্থনৈতিক একীকরণ এর দিকে ঝুঁকছে। 

বাংলাদেশের সড়ক পথ ব্যবহার করে ভারতের ভেতর দিয়ে ভুটানে ট্রানশিপমেন্ট পণ্য পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘আলোচনার জন্য এটা উপযুক্ত স্থান নয়।’ দুই দেশের রাজধানী এটা নিয়ে আলোচনা করবে।

গত বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে পতন ঘটে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই ঘটনার পর ভারতে আশ্রয় নেয় হাসিনা। আর কার্যত সেই থেকেই দুই দেশের সম্পর্কও তলানিতে ঠেকে। এরপর ভারতের চলমান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসব যেমন বন্ধ হয়ে যায় তেমনি দুই দেশের তরফেই কঠোর ভিসা নিয়ন্ত্রণ শুরু করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে আরো বৃহৎ পরিসরে চলচ্চিত্র উৎসব শুরু ও দুই দেশের চলাচলের উপর গুরুত্ব আরোপ নতুন শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ