মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান
Published: 21st, April 2025 GMT
মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলছেন, তিন স্তরে ইন্টারনেটের দাম কমতে যাচ্ছে। ফাইবার অ্যাট হোম কর্তৃপক্ষ তাদের ৩ পর্যায়ের সংযোগের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ফয়েজ আহমদ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এসব তথ্য জানান। তিনি লিখেছেন, ফাইবার অ্যাট হোম আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ ও এনটিটিএন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ দাম কমাবে।
এ নিয়ে ইন্টারনেট লাইসেন্সীপর্যায়ে মোট তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ।
আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি তাদের সব ধরনের সেবায় ১০ শতাংশ দাম ইতিমধ্যে কমিয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি গ্রাহক পর্যায়ে ৫০০ টাকায় এখন থেকে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে। অন্যদিকে ঈদুল ফিতরের দিন থেকে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক ১০ শতাংশ মূল্যছাড়ের ঘোষণা দেয়।
ফয়েজ আহমদ এবার দেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যেই সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম (নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র-ডেন্স ওয়েভলেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) ও ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে। এ অবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না। সরকার মোবাইল অপারেটরগুলোকে পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্তরগুলোতে পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হওয়ার পালা।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ। পাশাপাশি দ্রুতই তিনটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটর যৌক্তিকভাবে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা দেবে বলে তিনি আশা করেন।
ফয়েজ আহমদ জানান, সরকার এখানে দুই ধরনের মূল্য ছাড় আশা করে—সরকারের দিক থেকে শুল্ক বৃদ্ধির উদ্যোগে অপারেটররা অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ যে মূল্য বাড়িয়েছিল সেটা কমাবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক গেটওয়ে/আইটিসি, আইআইজি ও ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যতটুকু পাইকারি দাম কমানো হয়েছে তার সমানুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমাবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মানে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এ অবস্থায় গ্রাহকস্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে গ্যাস ফিল্ডস কর্মকর্তা হত্যায় প্রধান আসামির জামিন নামঞ্জুর
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের কর্মকর্তা ময়নুল হোসেন আয়ানীকে (৫৫) সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মামলার প্রধান আসামি উমর আলী (২২)। বিচারক তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আহমদ।
নিহত ময়নুল হোসেন সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০২৪ সালের ১৩ জুন রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে তিনি নিহত হন। তখন সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রচার পায়। এ ঘটনায় তামাবিল হাইওয়ে থানার পক্ষ থেকে মামলা দায়ের হয়েছিল।
ময়নুল হোসেনের মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর স্থানীয় মসজিদে এক বৈঠকে একই গ্রামের ইউসুফ আলী (২২) নামের এক তরুণ ময়নুল হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামও তিনি বলেন। উমনপুর গ্রামে একটি বাড়ি থেকে লিচু চুরি ও সালিসের জেরে ময়নুল হোসেন আয়ানীকে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুনদাফনের দুই সপ্তাহ পর জানা গেল, দুর্ঘটনা নয় হত্যা করা হয়েছিল গ্যাসফিল্ড কর্মকর্তাকে২৮ অক্টোবর ২০২৪ইউসুফ আলীর স্বীকারোক্তির পর নিহত ময়নুলের ভাই নাজমুল হোসাইন ওই বছরের ৭ জুলাই আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন। আদালত ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলা রেকর্ড করার আদেশ দেন। ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর জৈন্তাপুর থানায় মামলা রেকর্ড হয়। এতে উমনপুর গ্রামের উমর আলী (২২), সোহেল আহমদ বারেক (২২), ইউসুফ আলী (২২), সুবেদ আলী (২১), হরমুজ আলী (৪২), মোহাম্মদ আলী (৪২), মরম আলী (৬০), তাহের আলী (৪৫) ও সমসুর ইসলামকে (৫৪) আসামি করা হয়। মামলা করার পর আসামিরা পালিয়ে যান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আহমদ বলেন, এর আগে উমর আলীর চাচা হরমুজ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আজ উমর আলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। পরে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেছেন।