মার্কিন তুলা আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ও বাংলাদেশি পণ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল কটন কাউন্সিলের (এনসিসিএ) সহায়তা চেয়েছে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল কটন কাউন্সিলের (এনসিসিএ) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গ্যারি অ্যাডামসকে লেখা চিঠিতে এই সহযোগিতা চেয়েছেন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ। একই চিঠি ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর এরিক গ্লেনকে দিয়েছেন বিটিএমইএর সভাপতি। গতকাল মঙ্গলবার বিটিএমএর একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। ৯ এপ্রিল সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার দিনে তা পরবর্তী তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ২৬ শতাংশ শুল্ক বসবে। এই ৯০ দিনের সময় কৌশলগত কূটনীতি ও আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন বিটিএমএ সভাপতি।

চিঠিতে বলা হয়, বিটিএমএ বাংলাদেশের ১ হাজার ৮৫৬ বস্ত্রকলের প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে সুতা ও কাপড় উৎপাদন, ডাইং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।

বিটিএমএর সভাপতি বলেন, ‘২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৭ কোটি ডলার মূল্যের তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছর বিভিন্ন দেশ থেকে যত সুতা আমদানি করেছে, তার ১২ শতাংশই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। আমরা বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুতা আমদানির পরিমাণ চার থেকে পাঁচ গুণ বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সুতা আমদানি বৃদ্ধিতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান শওকত আজিজ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুতা সংরক্ষণে নির্ধারিত কেন্দ্রীয় গুদাম স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুতা আমদানি চার গুণ করা।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্যে শিগগিরই বিটিএমএর ১২-১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবে। এ সফরে মার্কিন সরকার ও বেসরকারি খাতের অংশীজনদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে চিঠিতে উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে অগ্রগতি সাধনের চেষ্টা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ট এমএ আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক শওকত হত্যার ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক শওকত মোল্লা (২০) হত্যার ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত মাকসুদুর রহমান এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার মেহেদী আবু কাওসার, জনি মোল্লা ও আবু রাসেল শেখ (পলাতক), রবিদাসপল্লির রাজেশ রবিদাস এবং গোয়ালচামট মহল্লার রবিন মোল্লা। তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রাজবাড়ীর সদরের মসলিসপুর গ্রামের বাদশা শেখকে। সেই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন বাদে বাকি সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, শওকত মোল্লা শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার আয়নাল মোল্লার ছেলে। ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ইজিবাইক নিয়ে বেরিয়ে তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে শহরের মোল্লাবাড়ি সড়কের পাশের একটি ধানখেতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ১৬ নভেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন শওকতের বাবা আয়নাল মোল্লা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শওকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের ইজিবাইক ও তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় হত্যাকারীরা।

আদালতের সরকারপক্ষের কৌঁসুলি চৌধুরী জাহিদ হাসান জানান, বর্তমানে ইজিবাইক হাতিয়ে নেওয়ার জন্য খুনের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি সমাজের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফরিদপুরে ইজিবাইক চালক হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
  • ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক শওকত হত্যার ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড