বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে: শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার
Published: 24th, April 2025 GMT
সাইকেল চুরির বিষয়ে অভিযোগ দিতে গিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে দুর্ব্যবহার ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
হেনস্তার শিকার শিক্ষার্থীর নাম ইভান তাহসিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেজিস্ট্রারের অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি অডিও ক্লিপ হাতে এসেছে। অডিও ক্লিপে শোনা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো.
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বের হয়ে যাও। এই ওরে বের করে দাও। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দিতে রেজিস্ট্রার অফিসে যান ইভান তাহসিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ মো. গিয়াস উদ্দিন সমস্যার সমাধান না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাঁদের কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এ বিষয়ে ইভান তাহসিব বলেন, এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরির অভিযোগ জানাতে তাঁরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়েছিলেন। এ সময় রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই। শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব তিনি নিতে পারবেন না।
ইভান বলেন, ‘তিনি যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দিতে না পারেন, তাহলে গ্যারেজ বন্ধ করে দিক; অথবা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ঘোষণা করুক, শিক্ষার্থীদের কোনো মালামালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না। একপর্যায়ে তিনি আমাকে তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।’
এ বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ মো. গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. গিয়াস উদ্দিনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছিল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স্যামির
চট্টগ্রামের সাগরিকায় উপস্থিত থাকা দর্শকরা গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাপোর্ট করেছে এমন কথা শুনলে অবাক হবেন নিশ্চিয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই এমন কিছুই হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে।
ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা আপাতদৃষ্টিতে এমনটাই মনে হয়েছে। লাল-সবুজের পতাকা গ্যালারিতে উড়তে দেখা যায়নি তেমনটা নয়। কিন্তু ম্যাচ যত গড়িয়েছে সেই পতাকা উড়ানোও তত কমেছে। টিকিটের মূল্য একেবারে হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবুও ভরেনি গ্যালারি।
লিটন, জাকের, তাসকিন, শরিফুল, সাইফদের পারফরম্যান্স এমন গড়পড়তা যে সমর্থকরা প্রতিপক্ষের ব্যাটিং-বোলিং দেখেই বেশি আনন্দিত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে নিবেদন, যে চাহিদা তা রোস্টন চেজ, আকিম আগাস্তের ব্যাটে পাওয়া গেলে সমর্থকদের দোষ কোথায়? তাদের চার-ছক্কায় গ্যালারিতে তালির ঝড় উঠে। উল্লাস, উদ্দীপনায় মাততে দেখা যায়।
আর স্বাগতিক দলের জন্য উড়ে আসে দুয়ো ধ্বনি। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান চললো পুরো ম্যাচ জুড়েই। বিশেষ করে সীমানায় থাকা ক্রিকেটাররা দর্শকদের রোষানলে পড়লেন বেশি। শুধু তা-ই নয়, স্টেডিয়ামের যাওয়া-আসার পথেও সেই সমর্থকরাই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে এলোমেলা করে দেন ক্রিকেটারদের।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে এসব স্লোগান একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড্যারেন স্যামির। ক্যারিয়ারে নানা সময় বাংলাদেশে আসায় কিছুটা বাংলা শব্দ তারও জানা। তবে ভুয়া অর্থটা জেনেছেন এবারই। তাইতো তার হৃদয়ে কিছুটা দহনও হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য, “তারা (দর্শকরা) ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। আমি শুনেছি তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলছে। এর অর্থও আমি জেনেছি। কিন্তু আমি মনে করি না, হোম টিমের দর্শক হিসেবে এমন করা উচিত। কারণ আপনারা তখন সমর্থক। প্রত্যেক ক্রিকেটারই মাঠে আসে তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। তাই আপনাদের উচিত, তাদের সমর্থন করা।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতানো স্যামি কঠিন সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বললেন, ‘‘তবুও তারা (দর্শকরা) ভালো। তারা নিজেদের দলকে পারফর্ম করতে দেখতে চায়। তবে যত বেশি সমর্থন ও উৎসাহ দেবেন, তারা তত দূর যেতে পারবে। ক্রিকেটারদের অযথা চাপে ফেলবেন না। ফ্যানদের বলব, তাদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন।”
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন