রাতে বালুর ট্রাকের টাকা গুনে নিচ্ছে পুলিশ
Published: 24th, April 2025 GMT
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ বলেছেন, চারঘাটে বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে, কিন্তু পুলিশ নীরব দর্শক। তারা রাতে গিয়ে বালুর ট্রাকের টাকা গুনে নিচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনো ভূমিকা নেই।
চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর চারঘাটের চৌরাস্তায় আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন হয়। চারঘাটের পিরোজপুর, গোপালপুর, মেরামতপুর ও চন্দনশহরসহ ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে বিএনপি নেতা আবু সাইদ বলেন, ‘চারঘাটের পিরোজপুর, গোপালপুর, মেরামতপুর ও চন্দনশহর এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। সাধারণত যখন পানি বাড়ে তখন নদীতে ভাঙন হয়। কিন্তু এখন শুষ্ক মৌসুমেই বিঘার পর বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঘরবাড়ি নদীগর্ভে যাওয়ার আতঙ্কে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না।’
পুলিশের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নদী ভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসন, ইউএনও, এসি ল্যান্ড প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এ জন্য তাঁদের দোষ দিতে পারছি না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, চারঘাট বলে একটা থানা আছে, ওসি আছে, পুলিশ আছে, কিন্তু এদের কোনো কাজ নেই। এরা বিগত সময়ে যেগুলো করছে, এখনো সেগুলোই করছে। ফেনসিডিলের টাকা, মদের টাকা, চোরাচালানের টাকার সঙ্গে এই পুলিশ বাহিনী জড়িত। বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে। পুলিশ নীরব। রাতে তারা বালুর ট্রাকের টাকা গুনে নিচ্ছে। পুলিশ হিসেবে তাদের কোনো ভূমিকা নেই।’ তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার প্রশাসনের কাছে আজকেই শেষ কথা। সেদিন ডিআইজি সাহেবকে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘একটা ফালতু ওসি। যে ওসির কোনো কাজ নাই। সে ওসি চারঘাটে থাকতে পারবে না। একটা ভালো ওসি, সুন্দর ওসি, যে ওসি পুলিশের সম্মান রাখতে পারবে, আমাদের সম্মান রাখতে পাবে, তাকে দেন। তারপরও যদি কাজ না হয়, জনগণকে নিয়ে এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএনপির এই নেতা ওসির উদ্দেশে বলেন, ‘আইন যে ভঙ্গ করছে, সে বিএনপির লোক হয়ে থাকলেও খাতির করছেন কেন, তাকে ধরেন। পরিষ্কার কথা আমার, আমি নিজে অন্যায় করে থাকলে আমাকেও ধরেন। যারা ঘাট দখল করে খাবে, চাঁদাবাজি করে খাবে তার দায়ভার বিএনপি নেবে না।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক মাসুদ রানা, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল মমিন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালেক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান প্রমুখ।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চারঘাট থানার ওসি মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স র রহম ন র ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে হত্যা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রংপুর–দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বক্তারা বলেন, নিজ বাড়িতে দম্পতিকে হত্যা করা হলো অথচ পুলিশ গত পাঁচ দিনেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারল না। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আনছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক শাজাহান খান, সদস্যসচিব ফজলার রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আলী হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি রেজাউল করিম বক্তব্য দেন।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়। গত রোববার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে মই বেয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রধান দরজার চাবি খুঁজে পেয়ে খুলে ঘরে ঢোকার পর প্রথমে ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের ও রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তাঁরা।
আরও পড়ুনরংপুরে নিজ বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার০৭ ডিসেম্বর ২০২৫পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যোগেশ চন্দ্র রায় ও সুবর্ণা রায়ের লাশ তাঁদের বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এরপর যোগেশ চন্দ্র রায়কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয় সম্মান শেষে তাঁদের সৎকার করা হয়। এ ঘটনায় দম্পতির বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।