জাকির খানের ছবি দিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা পলাশের পোষ্টার, তীব্র ক্ষোভ
Published: 27th, April 2025 GMT
ওসমান পরিবার ও কাউন্সিলার মুন্নার অন্যতম সহযোগী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দোসর ১৮ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকলীগের কার্যকরি সদস্য আহসান হাবীব পলাশ।
গত ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা পরিচয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নানা ছলাকৌশলে মেতে রয়েছেন তিনি। তার এই ভোল পাল্টানো নিয়ে বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এরই মধ্যে বিএনপি নেতা জাকির খানের মুুক্তির পর জাকির খানের ছবি দিয়ে শহরের সর্বত্র পোষ্টার সাটানোর পর বিএনপি ও অংঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই বলছেন, পলাশের মতো ধূর্ত ধান্দাবাজ কিভাবে বিএনপির তারেক জিয়া পরিষদ নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সভাপতি পরিচয় দেন? সে জাকির খানের মত জনপ্রিয় নেতার ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে জাকির খানের সম্মান ক্ষুন্ন করতে মাঠে নেমেছে।
আওয়ামী দোসরদের এজেন্ডা বাস্তবায়ণসহ জাকির খানের নাম বিক্রি করে অনৈতিকভাবে টাকা কামানোর মিশনে নেমেছে।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এর ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো.
শ্রমিকলীগের কমিটিতে সদস্য পদে থাকায় চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক জমি দখল ও স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা থাকায় সুবাদে প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে নিরীহ অসহায় লোকদেরকে প্রশাসন ও মামলার ভয় ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় ও তার নিজস্ব তৈরি করা কিশোর গ্যাং গ্রুপের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও টিসিবির মালামাল চুরির মামলা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ মামলা এবং হত্যা মামলায় জেল খাটা হ অগনিত অপরাধ ও অপকর্মের খারাপ রেকর্ড রয়েছে।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বুকে সেলিম ওসমানের প্লেকার্ড ঝুলিয়ে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের ১৮ নং ওয়ার্ডের কয়েকটি কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার কারিগর হিসেবেও তার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো সে সময়ে।
সেলিম ওসমানের পক্ষে লাঙ্গলের জন্য ভোট চেয়ে প্রকাশ্যে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন তিনি যা বিগত সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে ভাইরাল ছিল। এবং নির্বাচনের আগে পলাশ ও তার বাবা গরু জবাই করে তা দিয়ে ভুড়িভোজের আয়োজন করেছিলেন ।
সেলিম ওসমানের আর্শীবাদে সে সময়ে তিনি ১৮ নং ওয়ার্ডের একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো তার জিম্মায়। বর্তমানে ভোলপাল্টে জাকির খানকে মুক্তির শুভেচ্ছা দিয়ে নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয়ে পুর্বের ন্যায় বর্তমানে আধিপাত্য বিস্তারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন তিনি।
পুর্বে সেলিম ওসমান ,শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান ও কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার সাথে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে নিজেকে তাদের ঘনিষ্ঠ লোক এবং বর্তমানে জাকির খানের ছবি দিয়ে তা দিয়ে পুর্বের ন্যায় বর্তমানেও নিজেকে জাকির খানের একনিষ্টকর্মী হিসেবে জাহির করতে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের সময় আওয়ামী দলের পরিচয় দেয়া এই স্বৈরাচারী আওয়ামী দোসর হুট করে ভোল পালটে কি করে বিএনপির তারেক জিয়া পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সভাপতি হয়ে গেল অভিমত চলছে ১৮ নং ওয়ার্ডের বিএনপি'র বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মাঝে।
গত (১৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কারাবন্ধি জাকির খানের মুক্তিলাভের পর ১৮ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে বিএনপি নেতা বনে যাওয়ার অপচেষ্টা করছেন এমনটাই অভিমত স্থানীয়দের ।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবী, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের শ্রমিকলীগের কমিটিতে সদস্য পদে থাকা আহসান হাবীব পলাশ বহুরুপী নিজের স্বার্থ হাসিল করা ছাড়া অন্য কিছু না।
স্বার্থের জন্য একেক সময় একেক জনের সাথে সর্ম্পক গড়ে তুলে টাকা কামানোটাকে পেশা হিসেবে গড়ে তুলছেন এই পলাশ। পলাশের সুবিধাবাদী এরুপ কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ ১৮ নং ওয়ার্ডের শহীদ নগর এলাকা সাধারন মানুষ।
অনতিবিলম্বে আহসান হাবীব পলাশের এরুপ কর্মকান্ড এবং সে যেন বিএনপিতে অনুপ্রবেশ না করতে পারে সেজন্য জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ১৮ ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণসহ সর্বস্তরের বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের ঘনিষ্ঠ লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির তাকে চিনে না।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ওসম ন ন র য়ণগঞ জ জ ল স ল ম ওসম ন ম ওসম ন র কর ম দ র ন ত কর ম ব এনপ র সরক র র র ব এনপ র ১৮ ন পল শ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।