শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
Published: 30th, April 2025 GMT
শুরুটা হয়েছিল হোঁচট খেয়ে। কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় ওয়ানডেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৩৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে লিড নিয়েছে টাইগার যুবারা।
কলম্বোর কোল্টস ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে বৃষ্টির কারণে খেলা হয়েছিল কার্টেল ওভারে। প্রথমে ব্যাট করে ২৮ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ। বৃষ্টি আইন পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯৮ রান। তবে আলোকস্বল্পতায় খেলা থেমে যায় ২২ ওভারে। তখন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ১২০ রান। সেখান থেকেই জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ যুবারা।
ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ওপেনার কালাম সিদ্দিকী আউট হন মাত্র ৬ রান করে। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা জাওয়াদ আবরার এদিন দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান (৩৫ বলে)। এরপর অধিনায়ক আজিজুল হাকিম দলকে সামলে নেন। ৮৪ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন রিজান হোসেন। যিনি করেন ২৪ রান (৩৮ বলে)।
আরো পড়ুন:
অবশ্যম্ভাবী নাটকীয়তায় জমজমাট আইপিএল, দেখে নিন সমীকরণ
মিরাজের বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
জবাবে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কান যুবারা শুরুতেই বিপদে পড়ে যায়। মাত্র ৩৩ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় তারা। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। গামাগে অপরাজিত ছিলেন ৩২ রানে। রামিরু করেন ২১। বল হাতে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক আজিজুল। তিনি ১৭ রানে শিকার করেন ২টি উইকেট। পেসার আল ফাহাদও তুলে নেন ২ উইকেট।
এর আগের ম্যাচে (দ্বিতীয় ওয়ানডে) বড় জয়ে (৯ উইকেটে) ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ মে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।