সাগর-রুনির হত্যাকারী শনাক্ত করা যাচ্ছে না, ডিএনএ অস্পষ্টতায়
Published: 3rd, May 2025 GMT
দাম্পত্য কলহ, চুরি কিংবা পেশাগত কারণে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হননি। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন দু’জন। প্রথমে সাগর, পরে রুনিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ক্ষত নিয়েও তারা অনেকক্ষণ জীবিত ছিলেন। তবে ডিএনএ অস্পষ্টতার কারণে মূল হত্যাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত টাস্কফোর্সের অগ্রগতি তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর এ হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। টাস্কফোর্সকে প্রথম ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পারেনি। গত ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট তাদের আরও ছয় মাস সময় দেন।
তদন্ত শেষে আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে টাস্কফোর্সকে। নতুন করে সাত সাংবাদিকসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। তবে টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদনে কারও সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি; মেলেনি নতুন তথ্যও। র্যাসবের তদন্তে যে দু’জনের ডিএনএ প্রোফাইলিং হয়েছিল, সেখানেই আটকে আছে তদন্ত। ফলে দু’জন কারা ছিলেন, তা যেমন শনাক্ত হয়নি, জানা যায়নি হত্যার উদ্দেশ্যও।
সাগর-রুনির হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সমকালকে বলেন, ‘টাস্কফোর্স এখন পর্যন্ত আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেনি। গত ২২ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন নিয়ে এসেছিল। সেখানে তদন্ত সম্পর্কে কিছু কথা উঠে এসেছে।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া র্যাোব জানিয়েছিল, সন্দেহভাজন দু’জনের ডিএনএ খুবই অস্পষ্ট। পরে তাদের ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে পাঠানো হয়।
টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে খুন হন সাগর-রুনি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি জানায়, প্রথমে সাগর ও পরে ছুরিকাঘাত করা হয় রুনিকে। খুন হওয়ার আগে সন্তান মেঘকে নিয়ে একই খাটে শুয়ে ছিলেন দু’জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিসেরা রিপোর্টে চেতনানাশক বা বিষজাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। আগে থেকে বাসায় কেউ ছিলেন না। আবার জোর করে কেউ প্রবেশও করেননি। হত্যায় সাগর বাধা দিতে পারেন– এমন ধারণায় তাঁর হাত-পা বাঁধা হয়। রুনি নারী হিসেবে দুর্বল চিন্তা করে তাঁর হাত-পা বাঁধার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়নি।
‘ব্ল্যাড প্যাটার্ন’ পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা হয়, আগে মারা গেছেন রুনি। আর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে সমীকরণ মিলিয়ে টাস্কফোর্স বলছে, সাগরের মৃত্যু হয়েছে পরে। ঘটনাস্থলে চারজনের ডিএনএ পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনজন পুরুষ; একজন নারী। তাদের মধ্যে দু’জন সাগর-রুনি। তবে অন্য দু’জনের ডিএনএ কোনোভাবেই শনাক্ত করতে পারেনি টাস্কফোর্স। তাই হত্যার মোটিভ ও খুনে কারা জড়িত, এখন পর্যন্ত তা সুনির্দিষ্ট করা যায়নি।
অগ্রগতি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হত্যার পরদিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। এর আগে গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের পায়ের ছাপে ধ্বংস হয়ে যায় আলামত। তবে রান্নাঘরের বারান্দায় সাড়ে ১৪ ইঞ্চি ও সাড়ে ৮ ইঞ্চির ভাঙা অংশটি নতুন ছিল। তা দিয়ে সহজে মানুষ ঢুকতে ও বের হতে পারে। যদিও সেখানকার পূর্ণাঙ্গ ফুটপ্রিন্ট পাওয়া যায়নি।
এদিকে, সিআইডির সঙ্গে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে টাস্কফোর্স জানায়, একসঙ্গে দুই বা তিনজনের ডিএনএ থাকলে শনাক্ত করা সম্ভব। সংখ্যায় এর বেশি হলে শনাক্ত করা কঠিন। নমুনায় ৫ থেকে ৬ জনের ডিএনএ থাকায় তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাগর-রুনির বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া আলামতে অজ্ঞাতপরিচয় দু’জনের ডিএনএ পাওয়া যায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাব থেকে প্রোফাইলিং করে এনেছিল র্যাব। এ ডিএনএ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় দু’জন পুরুষের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে নতুন করে শুরু হওয়া তদন্তে সন্দেহভাজন এমন কাউকে পাওয়া যায়নি, যার সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় দু’জনের প্রোফাইল ম্যাচ হয় কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা যায়।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স গর র ন ড এনএ প তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
কারিনার সঙ্গে পর্দায় অন্তরঙ্গ হতে ভালো লেগেছে: অর্জুন
‘‘কারিনার সঙ্গে পর্দায় অন্তরঙ্গ হতে ভালো লেগেছে। এখনও মনে পড়ে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলোতে অভিনয় করার কথা।’’— ২০২১ সালে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছিলেন অর্জুন রামপাল। সেই সাক্ষাৎকার নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
বলিউডের এক সময়ের আলোচিত জুটি কারিনা কাপুর ও অর্জুন রামপাল। পর্দায় তাদের রোমান্স—সিনেমায় অন্যরকম মাত্রা যোগ করতো। এই জুটি ২০১২ সালে মধুর ভান্ডারকরের পরিচালনায় ‘হিরোইন’ ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন। তবে সিনেমায় দুইজনের মিলন দেখানো হয়নি। যার ফলে সিনেমার কাহিনি যেমন দর্শক মনে রেখেছেন আবার তাদের অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলোর কথাও দর্শক ভুলে যাননি।
অর্জুন রামপাল সেই স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে একদিকে আলোচনায় এসেছেন, তেমনি সমালোচনায়ও পড়তে হয়েছে তাকে। কারিনাকে নিয়ে তার মন্তব্যটিকে ভালোভাবে নেননি দর্শকদের একাংশ। রেডিটের এক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘‘অর্জুনের এই মন্তব্য অদ্ভুত এবং অপেশাদার।’
আরো পড়ুন:
শরীর স্পর্শ করার প্রয়োজন হলে অনুমতি নিতেন শাহরুখ: শিবা
‘সাইয়ারা’ সিনেমার সাফল্য: প্রথমবার মুখ খুললেন নায়িকা
আবার আরেকজন লিখেছেন, ‘সেই সময় মনে হয় সকলেই এই ধরনের কথাবার্তা বলতে কোনোরকম দ্বিধাবোধ করতেন না।’ আবার কেউ কেউ মনে করছেন, অভিনেতা আসলে এসব বলতে চাননি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হিরোইন’-এ কারিনা কাপুর খান এবং অর্জুন রামপালের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেন রণদীপ হুদা, মুগ্ধা গডসে এবং দিব্যা দত্ত-সহ আরও অনেকে। এই সিনেমার গল্প এগিয়েছে মাহি নামে এক অভিনেত্রীকে ঘিরে। মাহি বিবাহিত প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। একটা পর্যায়ে হতাশায় ডুবে যায়। এবং শেষ পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যেতে বসে। তারপর আবার নায়িকা ঘুরে দাঁড়ায়। তবে মধুরের সব ছবির মতোই এক্ষেত্রেও নায়িকা ফের ঘুরে দাঁড়ায়।নতুন জীবনে প্রেমিক হিসেবে আসেন অর্জুন রামপাল।
ঢাকা/লিপি