বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সুগন্ধা নদীতে ইলিশ ধরার জালে একটি হাঙর ধরা পড়েছে। প্রায় সাত কেজি ওজনের হাঙরটি আজ রোববার সকালে স্থানীয় জেলে চুন্নু মাঝির জালে উঠে আসে।

হাঙরটি স্থানীয় রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা ফেরিঘাট–সংলগ্ন জেলেপল্লিতে এনে রাখা হয়। প্রায় ৩ ফুট লম্বা হাঙরটি জালে আটকে পড়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এটি এখন ওই জেলের কাছে আছে। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঙর সাগর ও লোনাপানির প্রাণী। মিঠাপানিতে এরা বাস করে না।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, হাঙর মিঠাপানির প্রাণী নয়। হয়তো হাঙরটি দলছুট হয়ে বা ভুলবশত এখানে চলে আসতে পারে। তবে এ ধরনের হাঙর যদি আরও বেশ কিছু এসব নদ–নদীতে পাওয়া যায়, তাহলে বুঝতে হবে সাগরে বাস্তুতন্ত্রে কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কিংবা খাবারের সংকটে তারা নদীতে চলে আসছে।

জেলে চুন্নু মাঝি জানান, আজ সকালে সুগন্ধা নদীতে ইলিশ ধরার জন্য জাল ফেলেছিলেন তিনি। সকাল ১০টার দিকে জাল তুলতে গিয়ে একটি হাঙর দেখতে পান। হাঙরটির ওজন প্রায় সাত কেজি। এটি পূর্ণবয়স্ক হাঙর নয় বলে তাঁর ধারণা।

স্থানীয় জেলেরা জানান, হাঙরটি জালে ওঠার পর কিছুক্ষণ জীবিত ছিল। পরে মারা যায়।

বাবুগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো.

নাজমুস সালেহীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে হাঙর বন্য প্রাণীর আওতাভুক্ত হওয়ায় এটা বন বিভাগ ভালো বলতে পারবে। তবে এখান থেকে সাগর অনেক দূরে। তাই এই নদীতে হাঙর থাকার কথা নয়।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে আহত ২০

ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক কুকুর পথচারীদের আক্রমণ করে কামড় দেয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে টিকাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

হামদহ মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা দীপু মিয়া বলেন, ‘বিকেলে আমাদের এলাকায় এক পথচারীকে একটি পাগলা কুকুর কামড় দেয়। কুকুরটি কয়েকজন পথচারীকে কামড় দিয়েছে, এমনকি বাড়ির ভেতরে ঢুকে শিশুদেরও আক্রমণ করেছে। দীর্ঘদিন শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে টিকা দেওয়া হয় না। এখন শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু হামদহ মোল্লাপাড়াই নয়, শহরের বিভিন্ন জায়গায় পাগলা কুকুর মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। সন্ধ্যায় সরকারি বালক বিদ্যালয়ের সামনে এক শিশুকে বাঁচাতে গেলে জামির নামে এক যুবক কুকুরের কামড়ে আহত হন। একইভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ঢুকে শাহিনুর রহমান নামে এক কর্মকর্তাকে কামড় দেয় কুকুরটি। আর কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাকও কুকুরের কামড়ে আহত হন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএএও শাহিনুর রহমান বলেন, ‘অফিস শেষ করে গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল নিচ্ছিলাম। হঠাৎ গাড়ির নিচ থেকে একটি কুকুর দ্রুত আমার দিকে আসে। তাড়ানোর চেষ্টা করলে সেটি আমার পায়ে কামড়ে দেয়। পরে অনেক চেষ্টা করে কুকুরটিকে তাড়াতে পারি। পরে হাসপাতালে এসে টিকা নিয়েছি।’

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক বলেন, ‘ঝিনাইদহ শহর থেকে ফিরে সড়ক ভবনসংলগ্ন কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমার ডান হাতে কামড় দেয়। এখন হাতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা করছে। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।’

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ছোয়া ইসরাইল বলেন, কুকুরে কামড়ানো রোগীদের টিকাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।

ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পৌর এলাকার বেওয়ারিশ কুকুরদের ধরে টিকা দেওয়া হতো। করোনার সময় থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কী করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ