বিদেশে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর শতভাগ শুল্কারোপের নির্দেশ ট্রাম্পের
Published: 5th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল রোববার ট্রাম্প নতুন এই শুল্কারোপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান। ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোর বিদেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রবণতায় হলিউড ‘ধ্বংস’ হয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি বিদেশে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর শতভাগ শুল্কারোপের নির্দেশ দিচ্ছেন।
এমন এক সময় ট্রাম্পের কাছ থেকে এই ঘোষণা এল, যখন আগ্রাসী বাণিজ্যনীতির কারণে দেশে-বিদেশে তুমুল সমালোচনার মুখে তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর বিপুল পরিমাণে শুল্ক আরোপ করেছেন।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, বিদেশে নির্মিত, বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করতে তিনি বাণিজ্য দপ্তর ও বাণিজ্য প্রতিনিধিকে নির্দেশ দিচ্ছেন।
গত মাসে চীন বলেছিল, তারা আমদানি করা মার্কিন চলচ্চিত্রের সংখ্যা কমাবে। চীনের এমন ঘোষণার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প এখন বিদেশে নির্মিত চলচ্চিত্রের ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতির প্রধান ভুক্তভোগী চীন। ট্রাম্প ইতিমধ্যে চীনের অনেক পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
আরও পড়ুনট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে৩০ এপ্রিল ২০২৫গতকাল ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রশিল্প খুব দ্রুতগতিতে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশ মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে নিতে নানা ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। হলিউডসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির শামিল বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা চলচ্চিত্রশিল্পের ওপর কী প্রভাব ফেলবে কিংবা ঠিক কীভাবে এই শুল্ক কার্যকর করা হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ১০০ দিন: বিশ্বজুড়ে টালমাটাল অবস্থা ২৯ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আয় কতটা বাড়ল৩০ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, এ নিয়ে ৬ বার
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উত্থাপন করা ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এ নিয়ে ৬ বার গাজার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটো দিল।
সর্বশেষ প্রস্তাবটির খসড়ায় গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলকে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং ত্রাণ সরবরাহ করতে দেওয়ার কথাও বলা ছিল। এর বিপরীতে খসড়া প্রস্তাবটিতে গাজায় জিম্মি অবস্থায় থাকা ইসরায়েলিদের অবিলম্বে সম্মানজনক মুক্তির শর্তও ছিল।
স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্যদেশ এ খসড়া প্রস্তাব তুলেছিল। স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে। বাকি ১৪ সদস্য দেশ খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে চলা সংঘাতের প্রায় ২ বছর হতে চলেছে। এ সময়ের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের শর্ত যুক্ত করে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত ছয়টি প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে ভেটো দিয়েছে ওয়াশিংটন।
ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে হামাস একে ‘গণহত্যার অপরাধের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে জড়িত থাকা’ বলে চিহ্নিত করেছে।
ভোটাভুটির আগে জাতিসংঘে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কুস লাসেন নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন নিশ্চিত একটি বিষয়। অনুমান নয়, ঘোষণা নয়— এটা এখন নিশ্চিত।’
ক্রিস্টিনা আরও বলেন, গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এ মানবিক বিপর্যয়, এ মানবিক ব্যর্থতা আমাদের আজকের এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
আরও পড়ুন‘ফিলিস্তিন বলে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না, এই ভূমি আমাদের’, বললেন নেতানিয়াহু১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫গাজা সিটিতে কয়েক দিন ধরে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এরই অংশ হিসেবে এ শহরে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালাচ্ছে দেশটি। হামলার মুখে গাজা সিটি থেকে ফিলিস্তিনিরা দলে দলে হেঁটে আরও দক্ষিণ দিকে সরে যাচ্ছেন। অনেকে যানবাহন ও গাধায় টানা গাড়িতে গাজা সিটি ছাড়ছেন।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ইসরায়েলের১৯ আগস্ট ২০২৫ইসরায়েলের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনি গাজা সিটি ছেড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর আগে কমবেশি ১০ লাখ ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাঁদের অনেকে অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বছর দুয়েক ধরে চলা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন। এ তথ্য হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
আরও পড়ুনগাজার সামরিক প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারের নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করল হামাস৩১ আগস্ট ২০২৫