বান্দরবানে থানচি উপজেলার তিন্দু এলাকায় আজ সোমবার এক খেয়াং নারীর (২৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নির্মাণাধীন থানচি-রেমাক্রি-লেইক্রি সড়কের নালার মধ্যে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নিহত নারী তিন সন্তানের মা।

স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, থানচি উপজেলা সদর থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে খেয়াং জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। ওই নারী সকালে পাহাড়ে একাই জুমখেতে ধান রোপণ করতে যান। তাঁর দুপুরে ফিরে বাড়িতে ভাত খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফিরে না আসায় বিকেলে পরিবারের লোকজন ও পাড়াবাসী খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। জুমে খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পেয়ে এক পাশে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়া যায়। ওই চিহ্ন অনুসরণ করে নির্মাণাধীন থানচি-রেমাক্রি-লেইক্রি সড়কে নালায় লাশটি খুঁজে পাওয়া যায়। লাশটি বিবস্ত্র ছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

পাড়াবাসী জানিয়েছেন, ওই নারী গতকাল রোববার সকালেও একাই ধান রোপণ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু জুমে যাওয়ার পর কিছু দূরে তিনজন লোকজন দেখতে পান। তাঁকে দেখে অশোভন আচরণ করতে থাকে। ভয়ে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়িতে ফিরে বিষয়টি তিনি পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছেন।

তিন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভাগ্যচন্দ্র ত্রিপুরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জানিয়েছেন, দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর নারীকে হত্যা করা হয়েছে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। ওই নারীর তিন সন্তানের মধ্যে দেড় বছরের এক সন্তান রয়েছে।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার জানিয়েছেন, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম। বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা নারীর লাশ পাওয়ার সংবাদ পেয়েছেন। লাশ উদ্ধারের তাঁরা যাচ্ছেন। সুরতহাল করা হলে কীভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়টি জানা যাবে।

এ ঘটনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেনস ফেডারেশন (এইচিডব্লিউএফ) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ