পুরান ঢাকাকে কেন্দ্র করেই আজকের ঢাকার বিস্তার। কিন্তু সেই পুরান ঢাকা আর কেন্দ্রে থাকতে পারেনি। এখন এর অবস্থান প্রান্তে এবং ঢাকার মধ্যেই এক ভিন্ন ঢাকা।
পুরান ঢাকার ভিন্নতা সবকিছুতেই। এর অলিগলি, স্থাপত্য, খাবার ও খাবারের দোকান, ভাষা বা রসবোধ, গলির আড্ডা, এমনকি গন্ধ—সবই যেন নিজস্ব। সেখানকার ‘মহল্লাবাসী’ এর কতটা টের পায়, কে জানে! কিন্তু পুরান ঢাকার এসব প্রাত্যহিকতাই তো একজন আগন্তুক বা পর্যবেক্ষকের কাছে অনন্য।
আলোকচিত্রশিল্পী মুনেম ওয়াসিফ পুরান ঢাকার এই বিশেষ রূপ, রস, বর্ণ ও গন্ধের সন্ধানে দিনের পর দিন ঘুরেছেন সেখানকার অলিগলিতে। ক্যামেরা সঙ্গী করে তিনি এসব ধরতে চেয়েছেন দৃশ্যমাধ্যমে। এ জন্য তিনি এক দীর্ঘ এবং ধ্যানী পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি সেখানে হেঁটে বেড়িয়েছেন, সময় কাটিয়েছেন, বিশ্রাম নিয়েছেন, বিরতি নিয়েছেন, বদল বা পরিবর্তন বুঝতে এই জায়গায় আবার গেছেন। এভাবেই পার করে ফেলেছেন বছরের পর বছর।
মুনেম ওয়াসিফ এই দীর্ঘ সময়ে আলোছায়ার তুলিতে তোলা তাঁর স্থির ও চলমান ছবি এবং নানা সংগ্রহের বাছাই সমাবেশ ঘটিয়েছেন ‘ক্রমশ’ শিরোনামের দৃশ্যশিল্প প্রদর্শনীতে। ক্রমশ—মানে অব্যাহতভাবে বদলায়, যার একটি ধারাবাহিকতা আছে। প্রদর্শনীর শিরোনাম থেকে বোঝা যায় পুরান ঢাকা নিয়ে তাঁর এই যাত্রা চলমান। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে মাঝপথে তিনি যেন যাত্রাবিরতি নিলেন দর্শকদের সঙ্গে নিজের এত দিনের অভিজ্ঞতা বা উপলব্ধি ভাগাভাগি করতে।
মুনেম ওয়াসিফের ‘ক্রমশ’ শুধু একটি শহরের বা শহরের একটি নির্দিষ্ট অংশের ধারণ করা দৃশ্যের প্রদর্শনী নয়। বরং সময়, স্মৃতি ও বিশেষ স্থানের বিশেষ কিছু তুলে ধরার এক ধ্যানী অন্বেষণ। এই প্রদর্শনী আমাদের পুরান ঢাকার সঙ্গে এক আত্মিক যোগাযোগ ও সংলাপে আমন্ত্রণ জানায়। যেখানে পুরোনো আর আধুনিক সময়ের মধ্যে থমকে থাকা শহরটি নিজেই নিজের গল্প বলে যাচ্ছে।
আমরা দেখতে পাই, সেখানকার মানুষ একই সঙ্গে অতীত ও বর্তমানকে সঙ্গে নিয়ে কীভাবে নিজেদের জীবনযাপনের নিজস্ব জায়গাটি ধরে রেখেছে। আবার এটাও টের পাই যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে গেছে। কিন্তু পুরান ঢাকার রূপ, রস গন্ধ ও বর্ণ এরপরও আলাদাই রয়ে গেছে। পুরান ঢাকার বদলটিও তার মতোই নিজস্ব।
আলোকচিত্র: মুনেম ওয়াসিফ, ২০২২.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রমশ
এছাড়াও পড়ুন:
ইউরোপ ছেড়ে এবার আমেরিকার মাঠে ঝলক দেখাতে প্রস্তুত সন
দীর্ঘ এক দশক টটেনহ্যাম হটস্পারে কাটিয়ে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন সন হিউং-মিন। দক্ষিণ কোরিয়ার এই সুপারস্টারের পরবর্তী গন্তব্য যে আমেরিকার মেজর লিগ সকার (এমএলএস)। সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ফুটবল মহলে।
সিউলে আয়োজিত এক আবেগঘন সংবাদ সম্মেলনে ৩৩ বছর বয়সী সন আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, টটেনহ্যামের সঙ্গে তার পথচলার অবসান ঘটছে। পরদিনই নিউক্যাসলের বিপক্ষে মাঠে নেমে স্পার্সের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলার ইঙ্গিত দেন তিনি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠ ছাড়ার সময় সতীর্থ ও প্রতিপক্ষের গার্ড অব অনারে আবেগে ভেসে যান দর্শকরাও।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, সনের নতুন ঠিকানা হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ক্লাব লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি। ২০ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফি’র বিনিময়ে সম্পন্ন হতে যাচ্ছে এই চুক্তি। এখন কেবল অপেক্ষা মেডিকেল পরীক্ষা ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। আর এ চুক্তি চূড়ান্ত হলে প্রথমবারের মতো লিওনেল মেসির সঙ্গে একই লিগে খেলবেন সন। যদিও দুজন খেলবেন দুই কনফারেন্সে।
আরো পড়ুন:
নেইমারের জোড়া গোলে সান্তোসের জয়
টাইব্রেকারে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন
২০১৫ সালে জার্মানির বায়ার লেভারকুসেন থেকে টটেনহ্যামে যোগ দেন সন। এরপর টানা ১০ বছরে ক্লাবটির হয়ে খেলেছেন ৪৫৪টি ম্যাচ, করেছেন ১৭৩টি গোল এবং নিজের ঝুলিতে তুলেছেন প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুট। চলতি বছরেই ক্লাব অধিনায়ক হিসেবে ইউরোপা লিগে ম্যানইউকে হারিয়ে টটেনহ্যামকে ১৭ বছরের ট্রফিশূন্যতা থেকে মুক্ত করেন।
সনের বিদায় মানে এক যুগের অবসান হলেও, নতুন এই অধ্যায় তাকে ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে। লস অ্যাঞ্জেলেসের হয়ে মাঠ কাঁপাতে পারেন কিনা, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা। ফুটবলপ্রেমীদের চোখ এখন তাই মেজর লিগ সকারের দিকেই।
ঢাকা/আমিনুল