Prothomalo:
2025-09-19@18:16:23 GMT

ক্রমশ পুরান ঢাকা

Published: 6th, May 2025 GMT

পুরান ঢাকাকে কেন্দ্র করেই আজকের ঢাকার বিস্তার। কিন্তু সেই পুরান ঢাকা আর কেন্দ্রে থাকতে পারেনি। এখন এর অবস্থান প্রান্তে এবং ঢাকার মধ্যেই এক ভিন্ন ঢাকা। 

পুরান ঢাকার ভিন্নতা সবকিছুতেই। এর অলিগলি, স্থাপত্য, খাবার ও খাবারের দোকান, ভাষা বা রসবোধ, গলির আড্ডা, এমনকি গন্ধ—সবই যেন নিজস্ব। সেখানকার ‘মহল্লাবাসী’ এর কতটা টের পায়, কে জানে! কিন্তু পুরান ঢাকার এসব প্রাত্যহিকতাই তো একজন আগন্তুক বা পর্যবেক্ষকের কাছে অনন্য। 

আলোকচিত্রশিল্পী মুনেম ওয়াসিফ পুরান ঢাকার এই বিশেষ রূপ, রস, বর্ণ ও গন্ধের সন্ধানে দিনের পর দিন ঘুরেছেন সেখানকার অলিগলিতে। ক্যামেরা সঙ্গী করে তিনি এসব ধরতে চেয়েছেন দৃশ্যমাধ্যমে। এ জন্য তিনি এক দীর্ঘ এবং ধ্যানী পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি সেখানে হেঁটে বেড়িয়েছেন, সময় কাটিয়েছেন, বিশ্রাম নিয়েছেন, বিরতি নিয়েছেন, বদল বা পরিবর্তন বুঝতে এই জায়গায় আবার গেছেন। এভাবেই পার করে ফেলেছেন বছরের পর বছর। 

মুনেম ওয়াসিফ এই দীর্ঘ সময়ে আলোছায়ার তুলিতে তোলা তাঁর স্থির ও চলমান ছবি এবং নানা সংগ্রহের বাছাই সমাবেশ ঘটিয়েছেন ‘ক্রমশ’ শিরোনামের দৃশ্যশিল্প প্রদর্শনীতে। ক্রমশ—মানে অব্যাহতভাবে বদলায়, যার একটি ধারাবাহিকতা আছে। প্রদর্শনীর শিরোনাম থেকে বোঝা যায় পুরান ঢাকা নিয়ে তাঁর এই যাত্রা চলমান। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে মাঝপথে তিনি যেন যাত্রাবিরতি নিলেন দর্শকদের সঙ্গে নিজের এত দিনের অভিজ্ঞতা বা উপলব্ধি ভাগাভাগি করতে। 

মুনেম ওয়াসিফের ‘ক্রমশ’ শুধু একটি শহরের বা শহরের একটি নির্দিষ্ট অংশের ধারণ করা দৃশ্যের প্রদর্শনী নয়। বরং সময়, স্মৃতি ও বিশেষ স্থানের বিশেষ কিছু তুলে ধরার এক ধ্যানী অন্বেষণ। এই প্রদর্শনী আমাদের পুরান ঢাকার সঙ্গে এক আত্মিক যোগাযোগ ও সংলাপে আমন্ত্রণ জানায়। যেখানে পুরোনো আর আধুনিক সময়ের মধ্যে থমকে থাকা শহরটি নিজেই নিজের গল্প বলে যাচ্ছে। 

আমরা দেখতে পাই, সেখানকার মানুষ একই সঙ্গে অতীত ও বর্তমানকে সঙ্গে নিয়ে কীভাবে নিজেদের জীবনযাপনের নিজস্ব জায়গাটি ধরে রেখেছে। আবার এটাও টের পাই যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে গেছে। কিন্তু পুরান ঢাকার রূপ, রস গন্ধ ও বর্ণ এরপরও আলাদাই রয়ে গেছে। পুরান ঢাকার বদলটিও তার মতোই নিজস্ব।

আলোকচিত্র: মুনেম ওয়াসিফ, ২০২২.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রমশ

এছাড়াও পড়ুন:

নানা আয়োজনে দিনভর উৎসবের আমেজ

লম্বা পায়ে মাঠজুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে এক ব্যক্তি। মাথায় রঙিন পরচুলা। সাজসজ্জাও অদ্ভুত। বিশেষ কায়দায় বাঁশের এক জোড়া লম্বা লাঠির সাহায্যে ‘রণপা’ তৈরি করে হাঁটছিল ওই ব্যক্তি, যা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। সেই রণপা সাজের ব্যক্তির কাছে শিশু-কিশোরদের অনেকে আগ্রহ নিয়ে যাচ্ছিল, কেউ আবার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল। এর মধ্যেই পাশে দাঁড়িয়ে ছবি কিংবা সেলফি তোলা ও হাত মিলিয়ে করমর্দনও করছিল কেউ কেউ।

এ ছাড়া মাঠজুড়েই ছিল শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার নানা উপকরণ। মিনি ফুটবল খেলে গোল দেওয়া, লুডু খেলে পুরস্কার জেতা কিংবা বুদ্ধি খাটিয়ে ‘ফুট স্টেপ’ খেলা। এর বাইরে অনেক শিশু-কিশোর ছিল বাবুল্যান্ডে খেলাধুলায় কিংবা বায়োস্কোপ দেখায় মত্ত। অনেকে আবার টিয়া পাখির সাহায্যে নিজেদের ভবিষ্যৎও জেনে নিচ্ছিল।

রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় দক্ষিণ বারিধারা সোসাইটি মাঠে প্রথম আলো আনন্দমেলায় গতকাল শুক্রবার সারা দিনের চিত্র ছিল এমনই। সকাল থেকেই সেখানে ছিল উৎসবের আমেজ। মেলা শুরু হয় সকাল আটটায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে শিশু-কিশোর, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর আগমনে তা জমজমাট হয়ে ওঠে।

শুক্রবার সকাল আটটার কিছু আগে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবক নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে মাঠে আসছেন। সবার হাতে হাতে আঁকাআঁকির রংপেনসিল, তুলি, খাতা, স্কেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সাড়ে আটটায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’। প্রতিযোগিতায় তিন শতাধিক শিশু-কিশোর অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতায় পাশাপাশি বসে আঁকে দুই ভাই মেহরাব তালহা ও মাহির তাহমিদ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের বাবা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, বড় ছেলের স্কুল মাঠের পাশেই। স্কুলে ছেলেকে আনা–নেওয়ার সময় দেখেন মাঠে এই অনুষ্ঠান আছে। পরে দুই ছেলেকে বলে রেখেছিলেন যে তাদের এখানে অংশগ্রহণ করাবেন। ছোট ছেলে মাহিরের চিত্রাঙ্কনে বেশি ঝোঁক বলেও জানান তিনি। পরে মেহরাব জুনিয়র ক্যাটাগরিতে দশম স্থান অর্জন করে। সে স্মৃতিসৌধ এঁকেছিল।

প্রথম আলো আনন্দমেলায় ছিল বায়োস্কোপ প্রদর্শনী

সম্পর্কিত নিবন্ধ