সম্প্রতি বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১-এ হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ মারধর করে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে হিরো আলম বলেছেন, ‘‘ওই নারী যদি বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে আমি তাকে বউ হিসেবে গ্রহণ করব।’’ 

মঙ্গলবার বিকেলে হিরো আলম বগুড়ার এরুলিয়ায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন। এ সময় তিনি তার সম্মান ক্ষুন্নের অভিযোগে ওই নারী এবং তার সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানান। 

সাংবাদিক সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, ‘‘গতকাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সাংবাদিক ফোন দিয়েছেন, আমার নাকি কোর্টে মামলা হয়েছে। বিষয়টি জানতাম না। সকালে কোর্টে গিয়ে মামলার নথি উঠিয়েছি। যিনি মামলা করেছেন তিনি কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমার সাথে এবং তার মেয়ের সাথে তার ভালো বন্ধুত্ব। সে অনুযায়ী কিন্তু সে আমাদের বাসায় ২ মাস ভাড়া ছিল। ভাড়া থাকাকালীন আমার বাবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের সুবাদে আমার বাবা যখন অসুস্থ তখন সে ঢাকায় আমার বাবার সেবা করে।’’ 

‘‘কয়েকদিন আগে সে দাবি করে আমি তাকে বিয়ে করেছি। কিন্তু বিয়ের কাবিন দেখাতে বললে সে দেখাতে পারেনি। দেন মোহরের বিষয়ে সে জানিয়েছিল ১০১ টাকা দেন মোহর করা হয়েছে। এগুলো গুজব। গুজবের পেছনে কাজ করছে রিয়া মনি। সে আমাকে বলছে, ‘তুই আমাদের বাদ দিয়ে ১০টা বেটিছোলক লিয়া নাজগান করবু, তোর ব্যবস্থা করতেছি। তোকে চৌদ্দ শিকে ভরে রাখমু।’ কিন্তু আমাকে আটকানোর মতো কোন তথ্যপ্রমাণ রিয়া মনির কাছে নাই। সে যে আমার বিরুদ্ধে মামলা করবে সেটাও করতে পারছে না। তাই সে এই মেয়েকে নিয়ে খেলছে।’’

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট উল্লে করে হিরো আলম আরো বলেন, ‘‘আমার সম্মান নষ্ট করছে। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা করবো। তারা যে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলায় সে উল্লেখ করেছে, সে নায়িকা হওয়ার জন্য আমার কাছে এসেছিল। আপনারা বিষয়টি অনুসন্ধান করলে দেখবেন- সে মিডিয়ার কেউ না। ওই মেয়ের স্বামী আছে। নাম চমন। দুইটা ছেলে সন্তানও রয়েছে।’’

‘‘সে বিয়ের কথা বলছে, বিয়ের কোনো সাক্ষীপ্রমাণ আছে? বিয়ের যদি কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে আমি তাকে বউ হিসেবে গ্রহণ করে নেব। সে যে কথাবার্তা বলছে এগুলো প্রমাণ করতে পারলে আমি আইনীভাবে যে শাস্তি হবে মাথা পেতে নেব। আর যদি প্রমাণ করতে না পারে তাহলে তাদের শাস্তি পেতে হবে।’’ বলেন হিরো আলম। 

আইনের প্রতি আমার আস্থা আছে উল্লেখ করে এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, ‘‘পিবিআই যেন অবশ্যই আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে। আপনারা সবাই জানেন আমার তিনটা বিয়ে হয়েছিল। প্রথম বউয়ের নাম সুমি, দ্বিতীয় নুসরাত আর তৃতীয় রিয়া মনি। আমার তিনটা বউ কি কারণে গেছে বিস্তারিত বলেছি। যেহেতু রিয়া মনি আর মিথিলা আমার সম্মান নিয়ে টানাহেচড়া করছে তাই আমি তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করবো। এই দু’জনকে যারা উস্কানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো।’’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘‘হিরো আলম আগে স্বতন্ত্র ছিলো, এখনও স্বতন্ত্র। কেউ কাগজকলমে দেখাতে পারবে না, হিরো আলম এই দলের সাথে যুক্ত ছিলো।’’

উল্লেখ্য হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ মারধর করে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা করেন মিথিলা। মামলায় হিরো আলমসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। রবিবার (৪ মে) বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১-এ তিনি এ মামলা করেন। 
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, হিরো আলমের মেয়ে আলো বেগম, ব্যক্তিগত সহকারী আল আমিন, মালেক, স্ত্রী জেরিন এবং আহসান হাবাবী সেলিম। মামলার পর বিচারক মো.

আনোয়ারুল হক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য বগুড়ার পিবিআই পুলিশ সুপারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকা/এনাম//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র ব

এছাড়াও পড়ুন:

গণমাধ্যম সংস্কারে এক বছরেও অগ্রগতি নেই

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়নি, গণমাধ্যম সংস্কারেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা একথা বলেন।

বক্তারা বলেন, এখনো তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করছে এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছেন তারা।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ‘‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য হলেও সেখানে প্রকৃত সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চাই।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যেদিন সাংবাদিকরা রাজপথে নামবে, সেদিন কেউ রেহাই পাবে না।’’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘‘আজ আমাদের আনন্দ ও বেদনার দিন। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও এখনও গণতন্ত্র পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ। ভারতীয় টিভি চ্যানেল এখনো বন্ধ হয়নি। কিছু উপদেষ্টার অজ্ঞতা দেশকে অস্থির করে তুলছে।’’

বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরি বলেন, ‘‘সাইবার সিকিউরিটি আইন এখনো বাতিল হয়নি, এটা হাসিনার সরকারের মতোই দমনমূলক। ভোটহীন ১৭ বছর পর গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের আশায় অপেক্ষা করছি, কিন্তু এখনো সংস্কারের নামে শুধু প্রতিশ্রুতি শুনছি।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ১৭ বছর ধরে রাজপথে ছিলাম, রক্ত দিয়েছি। এবার যদি আবার প্রতারণা হয়, তাহলে সাংবাদিক সমাজ আর সহ্য করবে না।’’

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমে যারা স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, তারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গণমাধ্যমকে মুক্ত করতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ মুরসালীন নোমানী, রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাংবাদিক নেতা আব্দুল্লাহ মজুমদার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ