কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বদলীয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে উপজেলা সদরের ঈদগাহের সামনে কিশোরগঞ্জ-ঢাকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবি জানান। এ ছাড়া বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, নির্যাতন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন। বিক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজন অংশ নেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল-সানী বলেন, ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশের মাটিতে কোনোভাবেই রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে, বিচারের আওতায় আনতে হবে। আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’

জেলা ছাত্রশিবিরের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক এইচ এম ফরহাদ ভূঁইয়া বলেন, ‘যে শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের রাজনীতি বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না। যারা তিনটি অবৈধ নির্বাচন করেছে, বিনা ভোটের মাধ্যমে দেশের লাখো কোটি মানুষের অধিকারহরণ করেছে, তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ফেরাউনের চরিত্রে আবির্ভাব হয়ে শেখ হাসিনা এ দেশের দুই হাজারের অধিক ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। তাই তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার ২০ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ ও অবরোধের ফলে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে। খবর প্রেস টিভির।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ইউএনআরডব্লিউএ এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, গাজায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। সীমিত পানি সরবরাহের কারণে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ মিড-আপার আর্ম সার্কামফারেন্স (এমইউএসি)-ভিত্তিক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গাজা সিটিতে শিশুদের অপুষ্টির হার ২১.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ বর্তমানে প্রায় প্রতি পাঁচজন ছোট শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ১,৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘ

ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি

তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন এমন শিশুদের শনাক্ত করার জন্য এমইউএসি একটি বহুল ব্যবহৃত নৃতাত্ত্বিক পরিমাপ।

সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানায়, ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মীরা ‘অত্যন্ত ক্লান্ত, মানসিকভাবে চাপে আছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হচ্ছেন।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে কমপক্ষে একজন শিশু অনাহারে মারা গেছে, যার ফলে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ২৪০ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৭ জন শিশু রয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো গুরুতর অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার ব্যাপক ক্ষতি, নিরাপদ চলাচলে বাধা এবং চিকিৎসা সরবরাহ ও জ্বালানি প্রবেশের উপর ইসরায়েলি বিধিনিষেধ।

জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরবরাহের অভাব স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সংকটের মধ্যে ফেলেছে, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ও সংক্রামক রোগে ভুগছেন এমন রোগীরা প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে করে ব্যাপকভাবে জনস্বাস্থ্য সংকটের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। 

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কয়েক দশক ধরে আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা (হামাস) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম পরিচালনা করে। এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার আগে গত ২ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় সব ধরনের মানবিক ত্রাণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে  গাজায় মানবিক সংকটকে আরো ভয়াবহ হয়ে পড়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ