যুদ্ধবিরতির পর আইপিএল ফেরানোর তোড়জোড়, সিদ্ধান্ত আজ
Published: 11th, May 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর আবারও মাঠে গড়াতে পারে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। গতকাল শনিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় নতুন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত টুর্নামেন্ট ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
সীমান্তে উত্তেজনার কারণে গত শুক্রবার এক সপ্তাহের জন্য আইপিএল স্থগিত করেছিল বিসিসিআই। সেই দিন ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার ম্যাচটি মাত্র ১০.
বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা জানিয়েছেন, পরিস্থিতির পরিবর্তনে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল আজ (রোববার) আলোচনায় বসছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএল আবার কীভাবে শুরু করা যায় তা নিয়েই আজ আলোচনা হবে। সেরা সময়সূচি বের করে দ্রুত বাকি ম্যাচগুলো শেষ করাই এখন আমাদের লক্ষ্য।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ইতোমধ্যে বিদেশি ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের ফিরিয়ে আনতে যোগাযোগ শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহান্তেই, অর্থাৎ ১৫ মে’র পর থেকে আইপিএল পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি সরকারের অনুমতির ওপর নির্ভর করবে।
তবে এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো বিদেশি খেলোয়াড় ও কোচদের দ্রুত ভারতে ফেরানো। অনেকেই শুক্রবার ও শনিবারের মধ্যে দেশ ছেড়ে গেছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভ্রমণ পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে বলেছে এবং প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে। গুজরাট টাইটানস তুলনামূলকভাবে ভাগ্যবান। দলের কেবল দুই বিদেশি, জস বাটলার ও জেরাল্ড কোয়েৎজি ভারত ছেড়েছেন। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
বিসিসিআইয়ের লক্ষ্য, ২৫ মে’র আগেই আইপিএল শেষ করা। কারণ এরপর অনেক বিদেশি খেলোয়াড় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ও ১১ জুন লর্ডসে শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।
চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ৫৭টি ম্যাচ শেষ হয়েছে। ৫৮তম ম্যাচ ছিল পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের, যা ৮ মে বাতিল হয়। ম্যাচটি পুনরায় আয়োজন করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসেনি। টুর্নামেন্টে এখনো ১২টি লিগ ম্যাচ ও ৪টি প্লে-অফ ম্যাচ বাকি রয়েছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে দক্ষিণ ভারতের তিনটি শহর—চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে এসব ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এখনো সাতটি দল প্লে-অফের দৌড়ে আছে। ইতোমধ্যে চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালস বিদায় নিয়েছে এবারের আইপিএল থেকে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।