ব্রহ্মপুত্র নদে একসঙ্গে ভেসে উঠল নিখোঁজ দুই সহোদরের লাশ
Published: 12th, May 2025 GMT
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে গোসল করতে নেমে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা সম্পর্কে আপন ভাই। আজ সোমবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের পালের ঘাট এলাকায় শিশুদের মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করেন।
শিশু দুটির নাম ইমরান হোসেন (৮) ও ইব্রাহিম আলী (১২)। তারা উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দেলদারগঞ্জ এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে। এর আগে গত শনিবার বেলা তিনটার দিকে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চর জলাঙ্গারকুঠি গ্রামের পাশে নদীতে গোসলের জন্য নেমে তারা নিখোঁজ হয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছর ছয়েক আগে শিশু দুটির মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে তারা চর জলঙ্গারকুঠির বাসিন্দা নানা ইসলাম আলীর বাড়িতে থাকত। শনিবার বেলা তিনটার দিকে ইমরান ও ইব্রাহিম ব্রহ্মপুত্র নদে গোসল করতে যায়। এ সময় দুই ভাই নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও স্থানীয়দের সহায়তায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকালে ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার ভাটিতে হাতিয়া ইউনিয়নের পালের ঘাট এলাকায় দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে ভেসে ওঠে।
উলিপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আবদুর রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, শনিবার উলিপুর ও রংপুর থেকে ছয়জনের একটি ডুবুরিদল উদ্ধার অভিযান চালালেও নিখোঁজ শিশুটি দুটির সন্ধান পায়নি। আজ ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার ভাটিতে স্থানীয় লোকজন লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই শিশু নিখোঁজের খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরিদলের কর্মীরা নিখোঁজ এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত খোঁজ করেও নিখোঁজ শিশুদের সন্ধান পায়নি। আজ স্থানীয় লোকজন লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় ল কজন উল প র
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।
আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স