ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা নেই। বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ খবরে রাজপথে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছেন তার সমর্থকরা। রাজধানীর কাকরাইল, গুলিস্তান, পল্টন, মুগদা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করছেন তারা। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে এসব এলাকা।

আনন্দ মিছিলে অংশ নিয়েছেন ছাত্রদলের ওয়ারি শাখার সাবেক সহ-সভাপতি খাদেমুর রহমান। রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমরা শুধু ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। অবশেষে আদালত সত্যের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। এখন আর কোনো বাধা নেই। ইশরাক ভাই মেয়রের দায়িত্ব নেবেন। এটা গণতন্ত্রের বিজয়।”

পল্টনের যুবদল নেতা মো.

সাকিব বলেন, “আমরা টানা আট দিন নগর ভবনের সামনে অবস্থান করেছি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। আজকে সেই আন্দোলনের সফল পরিণতি দেখছি। এই রায় আমাদের দাবির ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে।”

কাকরাইল মোড়ে রাতভর অবস্থান নেওয়া বিএনপি কর্মী মনিরা আক্তার বলেন, “আমরা রাতে বাসায় যাইনি। এখানে বসে থেকেছি, স্লোগান দিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে, এত কষ্ট সার্থক হয়েছে। এই রায় আমাদের প্রত্যাশার জয়।”

বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম বলেন, “সরকার দীর্ঘদিন ইচ্ছাকৃতভাবে শপথ নিতে বাধা দিয়েছে। আজ আদালত বলেছে, শপথ নিতে আর কোনো বাধা নেই। আমরা চাই, অবিলম্বে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হোক।”

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন, যতক্ষণ না ইশরাক হোসেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইশর ক

এছাড়াও পড়ুন:

আদালতে সাবেক খাদ্য উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও খাদ্য উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে বরগুনার অতিরিক্ত মুখ্য হাকিম আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় শম্ভুর আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বিচারক মো. মনিরুজ্জামান শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শম্ভুকে বরগুনা কারাগারে আনা হয়। সেখান থেকে আদালতে তোলার সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় আদালত চত্বরের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শম্ভুকে উদ্দেশ্য করে ‘ভোট চোর, ভোট চোর, ভুয়া, ভুয়া’ প্রভৃতি শ্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত চত্বরে নৌ-বাহিনীর সদস্যসহ ব্যাপক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বরগুনায় ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ এবং হাতবোমা ফাটিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বরগুনা জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নঈমুল ইসলাম। ওই মামলায় শম্ভুকে এক নম্বর আসামি করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫৮ জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে শেখ হাসিনার পতনের পর দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন পাঁচবারের সংসদ সদস্য শম্ভু। পরে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে মহানগর গোয়েন্দা শাখার একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে নিউমার্কেট থানায় আন্দোলন চলাকালে নিহত ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়াও আশুলিয়া থানার অন্য একটি মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. নুরুল আমিন বলেন, সাধারণ মানুষ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। আদালতে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় হাজির করতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি একজন অপরাধী। তাই আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার আবেদন করেছি এবং আদালত নামঞ্জুর করেছেন।

তিনি আরও বলেন, শম্ভুর বিরুদ্ধে আরও কোনো অপরাধে অভিযোগ আছে কিনা সেটাও আমরা রাষ্ট্রকে জানানোর চেষ্টা করবো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ