রাজশাহী কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনে লড়বেন ৪ জন
Published: 29th, May 2025 GMT
দীর্ঘদিন পর ভর্তি কার্যক্রমে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী শনিবার (৩১ মে) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।
এরই অংশ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশসেরা রাজশাহী কলেজে ২৪টি বিভাগের ৪ হাজার ২৪০টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেছেন ১৫ হাজার ৮৫৭ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে প্রতিটি আসনের বিপরীতে লড়বেন অন্তত চারজন শিক্ষার্থী।
১৫ হাজার ৮৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ে (পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, গণিত) ৮৮০টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন ৮ হাজার ৮৪২ জন।
আরো পড়ুন:
বামপন্থীদের উস্কানিমূলক স্লোগানের প্রতিবাদ ঢাবি ছাত্রশিবিরের
ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনির শিকার বামপন্থীরা
মানবিক বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, মনোবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, আরবী, ইসলামিক স্টাডিজ) ২ হাজার ৪৫৫টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন ৫ হাজার ৬৯৫ জন শিক্ষার্থী।
ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে (হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, পরিসংখ্যান) ৯০৫টি আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৩২০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও রাজশাহী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এড়াতে আজ থেকেই সবার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে কেন্দ্রের সিট প্লানের তথ্য পাঠানো শুরু করেছি। এছাড়াও যদি কারো কাছে মেসেজ না পৌঁছায় তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কলেজে সিট প্লানের তালিকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রের বাহিরে আলাদাভাবে সিট প্লান রাখা হবে। পাশাপাশি আমাদের বিএনসিসি, রোভার দলের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সার্বিকভাবে সহায়তা প্রদান করবে।”
ঢাকা/ফারজানা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আসন র ব পর ত জন শ ক ষ র থ পর ক ষ য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।
জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।
পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।
মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।