একটা স্বপ্ন, কিছু ভালোবাসা, আর একটু সাহস থাকলেই জীবন বদলে যেতে পারে। অন্তত হেইলি বিবারের গল্পটা তাই বলে। ২০২২ সালের জুন মাসে নিজের নামের মাঝের অংশ নিয়ে ‘রোড’ নামে একটি স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেই ‘রোড’ এখন এক বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য। এক সময়ের ফ্যাশন প্রজেক্ট, আজ একটি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড।

সম্প্রতি বিশ্বের জনপ্রিয় কসমেটিক কোম্পানি ইএলএফ বিউটির কাছে ১ বিলিয়ন ডলারে ‘রোড’কে বিক্রি করে দিয়েছেন পপস্টার জাস্টন বিবারের স্ত্রী হেইলি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২,২০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। ইএলএফ বিউটি শুরুতেই তাঁকে দিচ্ছে ৮০০ মিলিয়ন ডলার নগদ ও শেয়ারে, আর ভবিষ্যতে বিক্রির ভিত্তিতে আরও ২০০ মিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার।

জানা গেছে, হেইলি বিবার চুক্তির পরেও কোম্পানিতে চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার হিসেবে যুক্ত থাকবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেইলি বলেন, ‘এই চুক্তি রোড ব্র্যান্ডের জন্য একটি নতুন অধ্যায় শুরু করছে। অন্য সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান নির্বাহীরাও বিক্রির পর কোম্পানির নেতৃত্বে থাকবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইএলএফ বিউটির সঙ্গে অংশীদারিত্ব একটি অসাধারণ সুযোগ এনে দিচ্ছে– যাতে আমরা আরও নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য তৈরি করে আমাদের কমিউনিটিতে আরও বড় পরিসরে পৌঁছাতে পারি এবং বিশ্বব্যাপী ডিস্ট্রিবিউশন বাড়াতে পারি।’

হেইলি যখন ব্র্যান্ডটি শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ২৬ বছর। নিজের স্কিন কেয়ার অভিজ্ঞতা আর ভালোলাগা থেকে পাঁচটি পণ্যের একটি ছোট লাইন তৈরি করেছিলেন; যার মধ্যে ছিল পেপটাইড লিপ ট্রিটমেন্ট আর পকেট ব্লাশ। দেখতে যতটা সাধারণ, ব্যবহারেও ততটাই কার্যকর আর মার্জিত। কোনো বাড়াবাড়ি নেই, কোনো রংচঙের ফাঁদ নয়। এই ‘পকেট ব্লাশ’ আর ‘পেপটাইড লিপ ট্রিটমেন্ট’ পরে টিকটকে ভাইরাল হয়, ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। হাজারো তরুণ-তরুণী ভিডিও বানায়, রিভিউ দেয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই, রোড আর পাঁচটা সেলিব্রেটি বিউটি ব্র্যান্ডের মতো হয়নি। এটি ছিল কিছুটা অন্যরকম।

বিষয়টি নিয়ে হেইলি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু তৈরি করতে, যা সত্যিই মানুষ ব্যবহার করে ভালোবাসবে। ট্রেন্ডের পেছনে ছোটার ইচ্ছা ছিল না; বরং আমি চেয়েছিলাম ছোট পরিসরে সেরা কিছু করতে।’ সূত্র: বিবিসি। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ