দেশের তিন জেলায় পানিতে ডুবে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে তিন, শেরপুরে দুই ও হবিগঞ্জে দুজন রয়েছে। শনিবার (৩১ মে) পৃথক সময়ে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরে আলাদা স্থানে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার চর রমণীমোহন ও চর রুহিতা ইউনিয়নে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আরো পড়ুন:

মেঘনায় ট্রলারডুবি: এক জনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ আরো ৫

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে মিলল ফারুকের গলিত লাশ

নিহতরা হলো- চর রমণীমোহন ইউনিয়নের চর রমণী গ্রামের সাঈদুল খোকনের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত (৪), একই এলাকার আব্দুল আসাদের ছেলে আল-আমিন (৫) ও চর রুহিতা ইউনিয়নের চর রুহিতা এলাকার সোহাগ হোসেনের মেয়ে আলিফা আক্তার (২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইয়াছিন ও আল-আমিন প্রতিবেশী। দুপুরে খালে গোসল করতে গিয়ে ডুবে যায় তারা। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।

অপরদিকে, আলিফা বাড়ির উঠানে খেলাধুলা করছিল। একপর্যায়ে শিশুটি পুকুরে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.

অরূপ পাল ও চররমনী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নয়ন বেগম  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরএমও বলেন, ‘‘পানিতে ডুবে তিন শিশু মারা গেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তারা মারা যায়। স্বজনেরা তাদের লাশ বাড়িতে নিয়ে গেছে।’’

শেরপুর

শেরপুরে বাড়ির পাশে ডোবায় গোসলে নেমে পানিতে ডুবে যমজ দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের ছোটঝাউয়ের চর নামাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- ওই গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে শিলা ও নীলা (১২)। দুই বোনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোখলেছ আলী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে শিলা-নীলাসহ চার শিশু বাড়ির পাশে ডোবায় জমে থাকা পানিতে গোসল করতে যায়। এসময় শিলা ও নীলা পানিতে ডুবে যায়। অপর দুই শিশু ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে শিলা ও নীলাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরের কোনো এক সময় চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের বরাব্দা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- বরাব্দা গ্রামের আরজু মিয়ার মেয়ে সাদিয়া আক্তার (৭) ও ছেলে নবিউর রহমান (৪)।

চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা/লিটন/তারিকুল/মামুন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

৭ দফা দাবিতে বিদ্যুৎকর্মীদের আজ মহাসমাবেশ

সাত দফা দাবিতে আজ সোমবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল রোববার এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দাবি আদায়ে ১২ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গ্রামাঞ্চলসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশে ৪ কোটি ৮২ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহক। এর মধ্যে আরইবির গ্রাহক ৩ কোটি ৬৮ লাখ। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার।

দাবি

সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে– আরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা ইত্যাদি।

আন্দোলন

দাবি আদায়ে গত বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন সমিতির কর্মীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। ২২ মে থেকে বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে সমিতিগুলোতে আংশিক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সমিতির অফিসে গ্রাহকসেবায় ব্যবহৃত অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইল ফোন জমা দেওয়া হয়। এতে অনেক এলাকার গ্রাহকসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, গ্রাহকসেবা চালু রেখে এবং জনদুর্ভোগ তৈরি না করে কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তাই আন্দোলন এগিয়ে নেওয়া ছাড়া তাদের গতি নেই।

সংহতি

পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলনে গত কয়েক দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও  সংগঠন সংহতি জানিয়েছে। গতকাল সংহতি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

নাসীরুদ্দীন বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা অশান্ত হলে দেশে অন্ধকার নেমে আসবে।
সামান্তা শারমিন বলেন, পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিবাদী কাঠামো রয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। এ কাঠামো ভাঙতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এদিকে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচনায় বসে পল্লী বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে জুলাই ঐক্য নামের একটি সংগঠন।

সরকারের উদ্যোগ

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সমকালকে বলেন, তাদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। একটি কাঠামোগত সংস্কার এক দিনেই করা যায় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ