দেশের উত্তর–পূর্বাঞ্চল বা সিলেট এলাকার অন্তত ৮ নদ–নদীর পানি বাড়ছে। আগামীকাল মঙ্গলবারও বাড়তে পারে এসব নদ–নদীর পানি। আর আগামীকাল তিন জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। সেই জেলাগুলো হলো সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, সিলেট জেলার সুরমা, কুশিয়ারা নদী ও মৌলভীবাজার জেলার মনু নদের পানি সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা নদী, মনু ও খোয়াই নদের পানি সমতল আগামী ৪৮ ঘণ্টা বাড়তে পারে এবং বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এর পাশাপাশি সারি, গোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই ও সোমেশ্বরীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময়ে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নদ–নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারের পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বাড়তে পারে এবং তিস্তা নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরীর পানি বাড়তে পারে। এই সময়ে মুহুরী, ফেনী, হালদা সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

পূর্বাভাসকেন্দ্রের বার্তায় বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের ও যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদ-নদীর পানি আগামী চার দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।  

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান আজ প্রথম আলোকে বলেন, অন্তত আটটি নদীর পানি আগামীকালও বাড়তে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে আছে পাহাড়ি ঢল। এর কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে বুধবার থেকে দেশে বৃষ্টি কমে আসতে পারে। তখন ইতিমধ্যেই সৃষ্টি হওয়া বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব পৎস ম র নদ র প ন পর স থ ত সতর ক নদ নদ

এছাড়াও পড়ুন:

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশ’–এর এক বছর পূর্তিতে প্রগতিশীল নারী সংগঠন, স্বতন্ত্র অধিকারকর্মী এবং নারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্মরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখান থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশের প্রতিপাদ্য ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম চলবেই।

গত বছরের ২৭ জুলাই কারফিউ ভেঙে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা পল্টন মোড়ে ‘হামার বেটাক মারলু ক্যানে’ শীর্ষক একটি সমাবেশ করেছিলেন।

সমাবেশে নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অবসান ঘটলেও এখনো ফ্যাসিবাদী কাঠামোর অবসান হয়নি। বরং দিন দিন নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটছে। যেখানে পাহাড়–সমতলের একের পর এক নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে নিপীড়ককে আশ্রয় ও দায়মুক্তি দিচ্ছে রাষ্ট্র।

তথ্য আপা রাজস্বকরণ আন্দোলনের প্রতিনিধি রোমানা ইসলাম বলেন, তথ্য আপারা দুই মাস ধরে প্রেসক্লাবে তাঁদের চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন, বসে আছেন। অথচ তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। তাঁদের ৭ বছর কর্মজীবনে বেতন থেকে কেটে নেওয়া ২০ কোটি টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।

হিল উইমেনস ফেডারেশনের সদস্য রুপসী চাকমা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে, তাই ভেবেছিল বাংলাদেশের নারী সমাজ। কিন্তু চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস নিরাপদে ঘুরে বেড়ালেও কল্পনা চাকমার যে মামলাটি আওয়ামী সরকার খারিজ করেছে, তা একইভাবে বলবৎ আছে এবং মামলা পুনরায় শুরুর জন্য শুনানির তারিখ বারবার পেছাচ্ছে।

বম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লালরিথাং বম অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকার বম জাতির ওপর ‘কালেক্টিভ পানিশমেন্ট’–এর নামে যত্রতত্র থেকে নিরীহ বমদের আটক শুরু করেছিল। আজও কারাগারে বমরা আটকে আছে। তিনজন বম ব্যক্তিকে কারাগারে অত্যাচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

আজ সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো, দুই মাস ধরে আন্দোলনরত তথ্য আপাদের চাকরি রাজস্বভুক্ত করতে হবে; নিম্ন আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করে পুনঃ তদন্ত ও চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের বিচারের আওতায় আনা এবং পাহাড় ও সমতলে নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে এবং কারাগারে আটক সব বমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মারজিয়া প্রভার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন শহীদ শেখ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলু মাখামিন শিল্পী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম প্রমুখ।

পাশাপাশি সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকটিভিস্ট ও কবি ফেরদৌস আরা রুমী, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য জাকিয়া শিশির, অ্যাকটিভিস্ট প্রাপ্তি তাপসী, চিকিৎসক সুরাইয়া ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।

সমাবেশে সূচনা ও সমাপনী সংগীত পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি
  • মাদারীপুরে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু