বন্ধুকের ফাঁকা গুলিতে ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত আদায়
Published: 7th, June 2025 GMT
প্রতিবারের মতো কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় এবারও মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী বন্ধুকের ফাঁকা গুলির মাধ্যমে পবিত্র ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোর থেকে দলে দলে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন মাঠে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রবেশপথে তাঁদের প্রত্যেকের দেহ তল্লাশি করা হয়।
শহরতলির শোলাকিয়া গাছবাজার এলাকার মো. আলী আকবর বলেন, ‘দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে এ মাঠে নামাজ আদায় করে আসছি। এবারও নামাজ আদায় করতে পেরে অনেক খুশি। তবে প্রতিবছরই ঈদুল আজহায় ঈদুল ফিতরের তুলনায় মুসল্লির সংখ্যা কম হয়। তাই ঈদুল আজহাতেও যাতে মাঠভর্তি মুসল্লির সমাগম ঘটে, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। তাঁর মতো আরও অনেকে দূরদুরন্ত থেকে এসে স্বস্তিতে ঈদের নামাজ আদায় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় মোনাজাত শেষে বাড়ি ফেরেন।
শোলাকিয়ায় এবার অনুষ্ঠিত হলো ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত। শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী বন্দুকের ফাঁকা গুলির মাধ্যমে সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসল্লিদের এ জামাতে ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।
ঈদে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত মুসল্লিদের নিয়ে সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখর হয়ে যায় ঈদগাহ ময়দান।
২০১৬ সালের ৭ জুলাইয়ের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সকাল থেকেই ঈদগাহ ময়দানে বিজিবি সদস্যসহ র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, সাদাপোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ ও বোমা ডিসপোজাল টিমের সদস্যদের তৎপরতা ছিল। ওয়াচ টাওয়ারসহ পুরো ঈদগাহ ময়দান সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। ছিল ফায়ার ব্রিগেড, অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমত নামাজ আদায় শেষে বলেন, মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করেছেন। দূরদূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা ছিল। তা ছাড়া নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করে মুসল্লিরা ঘরে ফেরায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে ঈদগাহটি একসময় ‘সোয়া লাখিয়া’ থেকে ‘শোলাকিয়া’ ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে এ বিষয়ে অনেক ইতিহাসবিদের দ্বিমত আছে। আরেকটি মতে, মোগল আমলে এখানকার পরগনার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল শ লাখ মানে এক কোটি টাকা। কালের বিবর্তনে ‘শ লাখ’ থেকে বর্তমান ‘শোলাকিয়া’ হয়েছে।
আরও পড়ুনযেভাবে ইতিহাস হলো শোলাকিয়া৩০ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল
শিল্পীর সৌজন্যে