অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযানের জেরে টানা দুই দিন ধরে বিক্ষোভ–সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর আল জাজিরার। 

শনিবার (৭ জুন) হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজ্যে যে অনাচার বৃদ্ধি পেয়েছে তা মোকাবিলা করার জন্য ট্রাম্প রক্ষীদের মোতায়েন করছেন।

আল জাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের দক্ষিণে শনিবার বিক্ষোভের সময় কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে ফেডারেল এজেন্টদের। তারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে। 

আরো পড়ুন:

আইসিসির বিচারকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানাল ইইউ

প্রকাশ্য বিরোধে ট্রাম্প-মাস্ক: পাল্টাপাল্টি হুমকিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

এছাড়া শুক্রবার রাতেও লস অ্যাঞ্জেলেসে ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টর (আইসিই) সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। আইসিই-র এজেন্টরা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে অভিযান চালানোর সময় সংঘর্ষ হয়। অভিযানে আইসিই অন্তত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

গ্রেপ্তারের পরেই বিক্ষোভকারীরা দেশটির ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে হাজির হয় এবং তাদের মুক্তি দাও, মুক্তি দাও বলে স্লোগান দেয়।

হোয়াইট হাউজের উপপ্রধান স্টিফেন মিলার একে ‘যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ’ বলে দাবি করেন। শনিবার তিনি আরো একধাপ এগিয়ে এটিকে ‘হিংস্র বিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, “এসব অভিযান যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবৈধ অপরাধীদের’ অনুপ্রবেশ বন্ধ ও তাদের প্রতিহত করার জন্য অপরিহার্য। এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ব্যর্থ’ ডেমোক্র্যাট নেতারা তাদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন।”

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে উসকানিমূলক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “এটি উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।”

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর আরো বলেন, “এই অভিযান একটি ভুল সিদ্ধান্ত এবং জনসাধারণের আস্থা নষ্ট করবে।”

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে নিউসমের সমালোচনা করে বলেন, “ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নিউসম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস অভিবাসন বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হওয়ায় তার প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।”

এফবিআই জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবারের ঘটনাগুলোর তদন্ত শুরু হয়েছে। এফবিআই-এর উপপরিচালক ড্যান বোঙ্গিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেন, ‘আমরা প্রমাণ যাচাই করছি এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের সঙ্গে কাজ করছি।’

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান ক্রিস্টি নয়েম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “এলএ দাঙ্গাকারীদের বলছি—তোমরা আমাদের থামাতে পারবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র লস অ য ঞ জ ল স য ক তর ষ ট র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

এখনও লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি সাভারের ট্যানারিতে

সাভারে শিল্প নগরীর ট্যানারিগুলোতে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া গতবারের চেয়ে সরবরাহ কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যানারিমালিকেরা। তাদের দাবি, সরকার বিনামূল্যে লবণ দেওয়ায় অনেক মাদ্রাসা এবং এতিমখানা কর্তৃপক্ষ তাদের সংগৃহীত চামড়া নিজেরাই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছেন। ফলে এবার ট্যানারিগুলোতে চামড়া সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া দেশের অন্যান্য জেলা থেকে কোনো চামড়া ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারায় চাহিদা মতো চামড়া সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ বছর ট্যানারিতে ৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও রোববার দুপুর পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৫ হাজার সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।

রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাভারের হেমায়েতপুর হরিণধরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক ট্যানারিতে চামড়ার স্তূপ আগের চেয়ে কম। কাঙ্ক্ষিত চামড়া না থাকায় শ্রমিকদের লবণ লাগানোর কোনো কর্মব্যস্ততা নেই। বেশিরভাগ কারখানায় মালিক অথবা দায়িত্বরত কর্মকর্তার উপস্থিতি দেখা যায়নি।
কিছু কিছু ট্যানারিতে অল্প পরিমাণের চামড়ায় লবণ মাখিয়ে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ চামড়ার সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত অংশ কেটে লবণ লাগাচ্ছেন। তবে চামড়ার সরবরাহ কম থাকায় অনেক ট্যানারিতেই শ্রমিকদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

সোনারবাংলা ট্যানারির মালিক আব্দুর শহিদ দুলাল জানান, সারাবিশ্বেই চামড়ার মূল্য কমে যাওয়ায় বাংলাদেশেও চামড়া শিল্পে এখন মন্দা অবস্থা। আমরা বেশি দামে কিনলে সেই চামড়া থেকে লাভ করা  কঠিন। তবে আমরা সরকারের নির্ধারিত মূল্যেই চামড়া ক্রয় করছি।

মা সুফিয়া ট্রেডার্সের মালিক মোহন বাদশা বলেন, গতবারের চেয়ে এবার চামড়ার সরবরাহ কম। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই আমরা চামড়া আকার ভেদে ৮০০-৯০০ টাকায় ক্রয় করছি। যারা ভালো চামড়া আনতে পারেন, তারা মূল্য ভালো পান। আবার যারা নষ্ট চামড়া নিয়ে আসেন তারা তুলনামূলক দাম কম পান।

বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সমতা লেদার কমপ্লেক্সের মালিক মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ১০ দিনের মধ্যে ঢাকায় বাহিরের চামড়া প্রবেশ করতে পারবে না। রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৫ হাজার চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। যেটা কমপক্ষে ৫ লাখ হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিলেট থেকে ২ হাজার চামড়া এসেছে।

তিনি বলেন, সরকার এ বছর ঢাকার মধ্যে সর্বনিম্ন লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেটা সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। চামড়ার দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা হলে প্রতি বর্গফুট পড়বে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। তাই সরকারের এ দাম নির্ধারণ যুক্তিযুক্ত হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ