আদালতের আদেশ না মানার অভিযোগ তুলে রাঙামাটি পার্বত‌্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১৪ সদস্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী এবং নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জেলার চার বাসিন্দার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন আজ বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই নোটিশ পাঠান।

পরিষদের দুই সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও পরিষদ সভায় তাঁদের উপস্থিতি ও তাঁদের নিয়ে সভা আদালতের আদেশের লঙ্ঘন ও অবাধ্যতা বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিশের ভাষ্য, উল্লেখিত অভিযোগের জন্য তাঁদের (নোটিশগ্রহীতাদের) বিরুদ্ধে আইন অনুসারে আদালত অবমাননার আবেদন করা হবে।

এর আগে রাঙামাটি পার্বত‌্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ পুনর্গঠন বিষয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাঙামাটি পার্বত‌্য জেলার ১০টি উপজেলা থেকে প্রতিনিধি না নেওয়া, হত‌্যা মামলার আসামি এবং একই পরিবারের একাধিক সদস‌্যকে নিয়ে জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের অভিযোগ তুলে প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে আইনজীবী রাজীব চাকমাসহ চার ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৩ মার্চ হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। পরিষদের দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনায় তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা।

নোটিশদাতাদের আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা। শুনানির পর গত ২১ এপ্রিল চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দেন। পরে আরও কিছু তথ্যসহ দ্রুত শুনানির জন্য গত ২২ মে আপিল বিভাগে আবেদন করেন রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা। আপিল বিভাগ ২ জুন লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে রিটটি (চার ব্যক্তির করা) এক মাসের মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন।

নোটিশদাতা চার ব্যক্তির আইনজীবী মো.

সুলতান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ও “নো অর্ডার” বিষয়ে জানার পরও ওই দুই সদস্য (প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা) অপর সদস্যদের সঙ্গে গত ৫ ও ১৩ মে পরিষদের সভায় বসেন এবং পরিষদের চেয়ারম্যানের আহ্বানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী ও নির্বাহী কর্মকর্তা সভা আয়োজন করেন। যা হাইকোর্টের গত ৯ মার্চ এবং আপিল বিভাগের গত ২১ এপ্রিল ও ২ জুন দেওয়া আদেশ লঙ্ঘন ও আদেশের প্রতি অবাধ্যতা। তাই আদালত অবমাননার অভিযোগে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৪ সদস্যসহ ১৮ জনের প্রতি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত আইনজ ব সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ

সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থী সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল—এই তিন বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা আবারও নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ২৬ জুন শুরু হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১৮৭ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষার আয়োজনে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা গত সপ্তাহে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

আদেশের পর আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮৭ শিক্ষার্থী কলেজটির ভুলের কারণে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না। কলেজটির এই বিষয়গুলোর অনুমতি ছিল না। যে কারণে নিজে আবেদনকারী হয়ে জনস্বার্থে রিটটি করেন। এই ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন ১৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলো দিতে পারবেন।

সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। গত ১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানায়, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পাঠদানের কোনো অনুমোদন না থাকায় পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে কলেজের অনুমোদনপ্রাপ্ত ভিন্ন তিনটি বিষয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পেয়েছে এবং তাতে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাদানের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।

আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৮৭ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৪ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবশ্যিক পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ (আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়) বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে পূর্বনির্ধারিতসংখ্যক প্রশ্নপত্র সব কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের পক্ষে কিছু করার ছিল না। আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন আরও ৬টি কলেজে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁদের সংখ্যা মাত্র ২২। অন্যদিকে আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শতভাগ দায়ী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা ও বার্ষিক ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ
  • কুমিল্লার গোমতী নদীর জায়গায় থাকা ৫০৮ অবৈধ দখল-স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ
  • দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না