সিনেমা হলে আলো নেভে, পর্দা জ্বলে ওঠে আর চোখে ভাসে এক নারী, যাকে ঘিরে ছিল তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। নব্বই দশকের শেষ প্রান্তে ঢাকাই চলচ্চিত্রে যখন অশ্লীলতার স্রোত বইছিল, তখন ঝড় তুলে আবির্ভাব ঘটে চিত্রনায়িকা ময়ূরীর। এখন তিনি অনেক দূরে— ভৌগোলিকভাবে যেমন, তেমনি আলোচিত জগত থেকেও।

ময়ূরীর শুরু ‘মৃত্যুর মুখে’ আর শেষ সিনেমা ‘বাংলা ভাই’। মাঝখানে রয়ে গেছে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয়, সাহসী দৃশ্যের একের পর এক তরঙ্গ, আর বিতর্কের বিস্ফোরণ। কাটপিসের চাহিদার তালিকায় সবার ওপরে ছিলেন ময়ূরী, যাকে নিয়ে একদিকে দর্শকের টান, অন্যদিকে সমাজের কপট মুখভঙ্গি।

অশ্লীলতার তকমায় ঢালিউড যখন নড়বড়ে অবস্থায়, তখনও একের পর এক হিট সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন বর্তমান সময়ের দেশ সেরা চিত্রনায়ক শাকিব খানসহ অনেকেই। তখনকার সময় ঢালিউডে যত সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশেই ময়ূরী ছিলেন!

এক সময় এফডিসির আলো, এখন শুধুই নীরবতার নাম ময়ূরী। দেশীয় চলচ্চিত্র যখন সুস্থ ধারায় ফিরতে থাকে, তখন হারিয়ে যেতে থাকেন ময়ূরী। স্টেজ শো আর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোট— এসব ছাড়া তার দেখা মেলে না। আর এখন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই আলোচিত অভিনেত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। নিউইয়র্কে, নিজের দুই সন্তান, মা ও ভাইকে নিয়ে গড়েছেন পারিবারিক স্থিতি। সরাসরি কোনো গণমাধ্যমে কথা বলেন না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে জানান দেন নিজের অস্তিত্ব।

কয়েক বছর আগে ময়ূরী ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিজের জীবনসংগ্রাম ঘিরে ‘ডার্টি পিকচার’-এর আদলে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। অনেকে ভেবেছিলেন, এ যেন এক আত্মজৈবনিক প্রতিবাদের গল্প হবে। কিন্তু সেই স্বপ্নও আলোর মুখ দেখেনি। কেন থেমে গেল সেই উদ্যোগ, সে প্রশ্ন থেকে গেছে।

তবে ইতিহাস বলছে, তিনি ছিলেন এক অ্যাবসার্ড যুগের নায়িকা, যিনি সমালোচনার মধ্যেও আলো ছড়িয়েছেন, সাহসের সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ক্যামেরার সামনে। আজ তিনি আছেন এক নির্জন আত্মোপলব্ধির জীবনযাপনে। কিন্তু বাংলা সিনেমার ইতিহাসের পৃষ্ঠা ওলটালেই ময়ূরীর নাম চোখে পড়বে, রঙিন কিংবা সাদা-কালো আলোচনায়।

ঢাকা/রাহাত//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বেসবলে’ ৬৭৫০ স্বাক্ষর

যুক্তরাষ্ট্রে ৮ ফুট ব্যাসের বিশাল আকৃতির একটি বেসবল একটার পর একটা মাঠ ঘুরে বেড়াচ্ছে, ভক্ত-দর্শকেরা হইহই করে সেটি দেখতে যাচ্ছেন, বলের গায়ে নিজেদের নাম সই করছেন। এই সই করতে করতেই বলটি নতুন এক বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

বিশাল বলটি তৈরি এবং সেটিতে স্বাক্ষর গ্রহণের এ উদ্যোগ মাইনর লিগ বেসবল কর্তৃপক্ষের। গত ২৪ জুন ইন্ডিয়ানাপোলিস ইন্ডিয়ানস দলের মাঠ ভিক্টরি ফিল্ড থেকে বলটি যাত্রা শুরু করে। এরপর এটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১৫টি মাইনর লিগ মাঠে ঘুরে বেড়ায়।

বলটির শেষ গন্তব্য ছিল নিউইয়র্ক শহরে মাইনর লিগ বেসবলের মূল মাঠ (ফ্ল্যাগশিপ)। গত মঙ্গলবার বলটি সেখানে পৌঁছায়। এরপর সেখানে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের একজন প্রতিনিধি বলটি পরীক্ষা করেন এবং এক এক করে গুণে দেখে নিশ্চিত করেন, এর গায়ে মোট ৬ হাজার ৭৫০টি স্বাক্ষর রয়েছে। একক কোনো ক্রীড়া স্মারকে এটিই এখন সর্বাধিক স্বাক্ষরের রেকর্ড। সেদিনই গিনেস রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বলটির এ বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বীকৃতি দেয়।

এর আগে এ রেকর্ড ছিল যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের, যাঁরা একটি বিশাল জার্সিতে ২ হাজার ১৪৬টি স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। নতুন রেকর্ডটি সেই সংখ্যাকে অনেকটাই ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্ব রেকর্ড গড়া বলটি শুধু আকারেই বিশাল নয়, ওজনেও ভারী। সেটির ওজন প্রায় ১ হাজার ২০০ পাউন্ড। এটি বিশেষভাবে তৈরি স্বচ্ছ অ্যাক্রিলিক কেসে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে ভ্রমণ করেছে। উদ্দেশ্য ছিল, এটিকে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় মানুষ যেন দেখতে পায় এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

মাইনর লিগ বেসবলের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পেছনে ছিল একটি চিন্তা। তাদের বিপণন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন সাটন বলেন, ‘সাধারণত খেলোয়াড়েরা বল সই করেন, এবার আমরা চেয়েছি উল্টোটা হোক। ভক্তরা সই করবে আর সেই বল ইতিহাস গড়বে।’

ছয় সপ্তাহ ধরে বলটি ২ হাজার ৬০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়েছে। যাত্রাপথে বলটি যে ১৫টি মাঠ ঘুরেছে, সেগুলোর মধ্যে আছে ফোর্ট ওয়েইন, ডেটন, লুইসভিল, সিরাকিউজ, বাফেলো, ইরি, আলটুনাসহ আরও বেশ কয়েকটি শহরের বেসবল মাঠ। নিউইয়র্কে শেষ দিনে ৬৮৪ দর্শনার্থী বলে সই করেন। সবশেষ স্বাক্ষরটি করেন মাইনর লিগ বেসবলের কমিশনার রব ম্যানফ্রেড।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন পত্রিকা আনছেন রুপার্ট মারডক, নাম দ্য ক্যালিফোর্নিয়া পোস্ট
  • অনেক ইহুদি ভোটার জোহরানকে সমর্থন করছেন, একমত তাঁর গাজা ইস্যুতেও
  • ‘বেসবলে’ ৬৭৫০ স্বাক্ষর