বার্তা আদান–প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পাভেল দুরভ জানিয়েছেন, তিনি সব সম্পত্তি তাঁর শতাধিক সন্তানের মধ্যে ভাগ করে দেবেন।

রুশ বংশোদ্ভূত এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বলেছেন, তাঁর নিজের ছয় সন্তানসহ দাতা হিসেবে দেওয়া তাঁর শুক্রাণু থেকে যেসব সন্তানের জন্ম হয়েছে, তারাও সম্পত্তির সমান ভাগ পাবে।

ফ্রান্সের রাজনৈতিক সাময়িকী ‘লে পোঁয়া’–এ গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ৪০ বছর বয়সী দুরভ বলেন, পৃথক তিন নারীর গর্ভে তাঁর ঔরসে ছয় সন্তানের জন্ম হয়। এই ছয় সন্তানের সঙ্গে দাতা হিসেবে দেওয়া তাঁর শুক্রাণু থেকে যে সন্তানদের জন্ম হয়েছে, তাদের কোনো পার্থক্য করেন না তিনি।

পাভেল দুরভ বলেন, ‘তারা সবাই আমার সন্তান এবং তাদের সমান অধিকার আছে। আমি চাই না, আমার মৃত্যুর পর তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করুক।’ সম্প্রতি এ–সংক্রান্ত উইল লিখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গত বছর দুরভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি শুক্রাণু দান করছেন। একজন চিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছেন, এটা তাঁর ‘নাগরিক দায়িত্ব’। কারণ, তাঁর দান করা শুক্রাণু ‘উন্নত মানের’।

ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, দুরভের সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। তবে এই হিসাবকে ‘তাত্ত্বিক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দুরভ।

লে পোঁয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুরভ বলেন, ‘যেহেতু টেলিগ্রাম বিক্রি করছি না, তাই এই হিসাব গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই অর্থ নেই। আমার নগদ অর্থসহ অস্থাবর সম্পদ অনেক কম। আর এসব সম্পদ টেলিগ্রাম থেকে নয়, এসেছে ২০১৩ সালে বিটকয়েনে বিনিয়োগ থেকে।

তবে এত সহজে এই সম্পদ পাবে না তাঁর সন্তানেরা। এ জন্য তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। দুরভ বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত আমার কোনো সন্তানই এই সম্পদ পাবে না। আমি চাই, ব্যাংক হিসাবের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে তারা সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করুক; নিজেরাই নিজেদের গড়ে তুলুক, আত্মবিশ্বাস অর্জন করুক এবং সৃজনশীল হোক।’

দুবাইয়ে বসবাসরত দুরভ বলেন, তিনি সন্তানদের জন্য ইতিমধ্যে উইল লিখে দিয়েছেন। কারণ, তাঁর কাজ খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি সন্তানদের সুরক্ষা দিতে চান এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান টেলগ্রামকেও রক্ষা করতে চান। তিনি চান, টেলিগ্রাম যেন সব সময় তাঁর মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে।

টেলিগ্রামের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অর্থ পাচার, মাদক বাণিজ্য, শিশু পর্নোগ্রাফি প্রচারে সহযোগিতার অভিযোগসহ নানা অভিযোগে গত বছর প্যারিসে গ্রেপ্তার হন দুরভ।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দুরভ বলেছেন, ‘অপরাধীরা আমাদের অ্যাপ ব্যবহার করে বলে আমাদের অপরাধী বলা যায় না। এটা অযৌক্তিক ও হাস্যকর।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের যে পথে রয়েছি, সেটা বাস্তবায়ন হবে: নাহিদ ইসলাম 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদের যে পথে রয়েছি, সেটা বাস্তবায়ন হবে। সনদের আদেশ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে। সনদে কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না। আশা করব, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে নির্বাচনের দিকে যাব।’’

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সম্মেলন কক্ষে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে না পারলে রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়। সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের কথা ছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা ব্যর্থ হলেও আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’’
 
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘বিগত ১৬ বছর দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতেই শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হতো। ফ্যাসিবাদী কাঠামো বাংলাদেশে এখনো রয়ে গেছে। ব্যক্তি ও সমাজের চিন্তার পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ নির্মূল সম্ভব নয়।’’ 

এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, ‘‘বেকারত্ব দূর করতে হলে শিক্ষা খাতে হাত দিতে হবে আগে। সেখানে সংস্কার আগে করতে হবে। আমরা যদি শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে না পারি, তাহলে রাষ্ট্রের পরিবর্তন সম্ভব নয়।’’

ঢাকা/রায়হান/ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ