জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া কারাবন্দী-আটক প্রবাসীদের মুক্তিসহ চার দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 22nd, June 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কারাবন্দী-আটক হওয়া প্রবাসীদের মুক্তিসহ চার দাবিতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শতাধিক ব্যক্তি।
আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ‘জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত জেলফেরত ভুক্তভোগী প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কর্মসূচিতে ভুক্তভোগী প্রবাসীদের স্বজনেরাও অংশ নিয়েছেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা চারটি দাবি জানিয়েছেন। এগুলো হলো—জুলাই আন্দোলনের মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে কারাবন্দী, আটক প্রবাসীদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফেরত আসা প্রবাসীদের ‘জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। দেশে ফেরত আসা ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসন করা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফেরত আসা প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
শাহবাগ থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, এই আন্দোলনকারীরা সকালে শাহবাগ এলাকায় জড়ো হন। পরে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে মিছিল নিয়ে রওনা হন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এলে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে তাঁরা সেখানে অবস্থান নেন। এতে বাংলামোটর হয়ে যমুনা অভিমুখের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশের সহায়তায় আন্দোলনকারীদের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। অন্যরা সেখানকার সড়কের অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে তাঁরা, তাঁদের স্বজনেরা জেলে যান, আটক হন। তাঁদের মধ্যে ১৮৯ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন। তাঁদের মুক্তিতে সহায়তা করেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে প্রবাসীরা কারাবন্দী-আটক আছেন। তাঁদের মুক্তির বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সংযুক্ত আরব আমিরাতফেরত সগীর তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্য দেশে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীশ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছেন।
স্বামীর মুক্তির দাবি জানিয়ে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার নুরুন নাহার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে আমার স্বামী ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেলে বন্দী। আমার আরেক ভাইও সেখানে আটকে আছেন। আমরা বেশি কিছু চাই না। তাঁদের মুক্তি চাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব স দ র ক র বন দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল উদীচী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা–বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। একই সঙ্গে যাঁরা সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাঁদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে উদীচী।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেন, যারা শৈশব থেকেই সুর ও সংগীতচর্চার মধ্য দিয়ে বড় হয়, তাদের মধ্যে শুভবোধ সদাজাগ্রত থাকে। তারা মন্দ কোনো কাজের দিকে ধাবিত হয় না। আবহমানকাল ধরে বাংলার পথে–প্রান্তরে অনেক বৈচিত্র্যময় সংগীতের চর্চা হয়ে আসছে। সংগীতের চর্চা বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তাই শিশুদের সংগীত শিক্ষা দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা আরও বলেন, যাঁরা সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা শিশুদের মানসিক বিকাশ, নৈতিক শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সামাজিক আন্দোলনে সংগীত ও শিল্প-সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংগীত শিক্ষাকে শুধু বিনোদনের বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না।
গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫ প্রজ্ঞাপণ আকারে প্রকাশিত হয়। সেখানে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা–বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে।