ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল মধ্যরাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমানবাহিনী। ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে এই অভিযানে তারা ব্যবহার ‘বি-২ বোমারু’ যুদ্ধবিমান। এরপর থেকেই আলোচনায় আধুনিক প্রযুক্তির মার্কিন বোমারু বিমানটি। আলজাজিরা অবলম্বনে এই লেখায় জানানো হয়েছে কতটা শক্তি বি-২ বোমারু; কোন বৈশিষ্ট্য তাকে ভিন্ন করেছে অন্যান্য বোমারু বিমান থেকে।

বি-২ বোমারু
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধযান বি-২ বোমারু। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। পাশাপাশি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ভূগর্ভস্ত শক্তিশালী বাঙ্কার ধ্বংসের সক্ষমতা রাখে।

ডিজাইন
আধুনিক প্রযুক্তির এই বোমারু বিমানের ডিজাইনে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিমানটির নকশা করা হয়েছে উড়ন্ত ডানার বাজপাখির আদলে। বিমানের বাইরের কাঠামো বিশেষ ধরনের প্রলেপ দিয়ে ঢাকা থাকে। সেই প্রলেপে শত্রুর রাডার থেকে ছোড়া তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়। এছাড়া স্টেলথ প্রযুক্তিতে এটি এতোটাই উন্নত যে, বিশাল এই বিমানটি শত্রুপক্ষের রাডারে শুধু একটি ছোট পাখির সমান সংকেত প্রদর্শন করে।

দাম
প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আর কার্যকারিতায়ও অনন্য বি-২ বোমারু বিমান। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই এ প্রযুক্তি রয়েছে। আর বিমানের সংখ্যা ২১টি। তবে ২০০৮ সালে ঘটা দুর্ঘটনায় একটি বিমান ধ্বংস হয়ে যায়। এই সিরিজের একেকটি বিমানের মূল্য প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা।


প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য
বি-২ বোমারু বিমানের দৈর্ঘ্য ৬৯ ফুট, উচ্চতা ১৭ ফুট এবং এর ডানার বিস্তার ১৭২ ফুট। ওজনের দিক থেকে এটি ৭১ হাজার ৭০০ কেজি, তবে বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও বোমা বহন করে এটি সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭০ হাজার কেজি পর্যন্ত ওজনসহ উড়তে পারে।

বিমানের সক্ষমতা
বিশেষ এই বিমানটি বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও বোমা বহন করতে পারে। জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে এটি স্থির লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত হামলার পাশাপাশি একাধিক লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে সক্ষম। একইসঙ্গে এটি সর্বোচ্চ ১৬টি পারমাণবিক বোমা বহন করতে পারে। তবে বি-২ বোমারুর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অস্ত্র হলো এর বাঙ্কার বাস্টার বা জিবিইউ-৫৭ বোমা। এর ওজন প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ কেজি। বিশাল এই বোমাটি মাটির প্রায় ৬১ মিটার গভীরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতেও নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।

ইরানে হামলা
পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে যে, ইরানে চালানো হামলায় বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে। টানা প্রায় ৩৭ ঘণ্টা উড়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করেছে বিমানটি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, এই হামলায় ছোড়া হয়েছে ছয়টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা। তবে ইরান দাবি করেছে, তারা আগেই পারমাণবিক স্থাপনাগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলেছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র ব ম নট এই ব ম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের পরিবারের সাক্ষাৎ

বন্দুকধারীর হামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দিদারুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা।

আরো পড়ুন:

নিউইয়র্কে আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপ

কুমিল্লায় চার মাজারে হামলা, ২২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৯টায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। 

সেখানে বলা হয়, দিদারুল ইসলামের প্রতি সম্মাননা স্বরূপ পরিবারের সদস্যদের হাতে একটি ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দিদারুল ইসলামের বাবা মোহাম্মদ আবদুর রব, মা মিনারা বেগম, দুই ছেলে আয়হান ইসলাম ও আজহান ইসলাম, ভাই কামরুল হাসান, ভাইয়ের ছেলে আদিয়ান হাসান, বোন নাদিমা বেগম ও চাচা আহমেদ জামাল উদ্দিন। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পত্রিকায় ঘটনাটি পড়েছি। পড়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে হলো। টিভিতে দেখেছি নিউইয়র্কে তাঁর শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছিল। বহু মানুষের শোক-শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি। নিউইয়র্কে আসার পরিকল্পনার মধ্যেই আমাদের মনে হয়েছে অবশ্যই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে।”

পরিবারের সদস্যরা জানান, দিদারুল ইসলাম নিউইয়র্ক পুলিশের একজন দায়িত্বশীল ও প্রশংসিত কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। ব্রঙ্কসের ৪৭ নম্বর প্রিসিঙ্কটে তিনি কর্মরত ছিলেন। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। 

গত ২৮ জুলাই নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের পার্ক অ্যাভিনিউয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন দিদারুল ইসলাম। বন্দুকধারী এক তরুণ সেদিন বহুতল করপোরেট ভবনের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালান এবং পরে নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করেন। সেসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে গুলিতে দিদারুল নিহত হন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ