ময়মনসিংহে ‘ফাঁদে ফেলে’ প্রবাসীর ১৪ হাজার রিয়াল লুটে নেওয়ার অভিযোগে নারী গ্রেপ্তার
Published: 23rd, June 2025 GMT
ময়মনসিংহে ‘ফাঁদে ফেলে’ প্রবাসীর কাছ থেকে ১৪ হাজার রিয়াল লুটে নেওয়ার মামলায় এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বেলা ৩টার দিকে পুলিশ নগরের মহারাজা রোডের একটি বাসা থেকে রুমা আক্তার (২৫) নামে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, আজ বেলা ৩টার দিকে পুলিশের একটি দল নগরের মহারাজা রোডের ওই বাসায় রুমা আক্তার ও তাঁর স্বামী রকি মিয়াকে আটক করতে যায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রকি মিয়া পালিয়ে গেলেও রুমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে লুটে নেওয়া টাকা এখনো উদ্ধার হয়নি।
এর আগে গত শনিবার ময়মনসিংহ নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় আটাআনী পুকুরপাড় এলাকায় একটি বাসায় প্রবাসফেরত শওকত হোসেনসহ দুজনকে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। ফুলবাড়িয়া উপজেলার জঙ্গলবাড়ি গ্রামের শওকত হোসেনের অভিযোগ, এক মাস আগে তিনি দেশে আসেন। সেই খবর সংগ্রহ করে রুমা আক্তার মুঠোফোনে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত শনিবার বিকেলে ওই বাসায় কৌশলে ডেকে নিয়ে ১৪ হাজার রিয়াল (বিদেশি মুদ্রা), ১১ হাজার টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে আরও ২০ হাজার টাকা আদায় করে তাঁকে ছেড়ে দেয় চক্রটি। ইয়াবা ও নারীর সঙ্গে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও রাখা হয়। পরে শওকত হোসেন থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। শনিবার রাতেই পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে খলিলুর রহমান ওরফে সজল মিয়াকে (২৪) আটক করে। এ ঘটনায় থানায় হওয়া মামলায় রুমা আক্তারও এজাহারভুক্ত আসামি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, স্বামীর প্ররোচনায় রুমা আক্তার এ ধরনের অপরাধ করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। প্রবাসীর কাছ থেকে নেওয়া বিদেশি মুদ্রাগুলো উদ্ধারে এবং রকিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্য এবং এ ধরনের ফাঁদ পেতে মানুষের কাছ থেকে টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুনময়মনসিংহে নারীর ফাঁদে পড়ে ১৪ হাজার রিয়াল খোয়ালেন প্রবাসী, এরপর যা হলো২২ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১৪ হ জ র র য় ল প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির কমিটিতে আ.লীগ নেতাকর্মী, সমালোচনার ঝড়
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পদ দেওয়ার অভিযোগ আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তিন মাসের জন্য গঠিত এই কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন আশিক পাঠান। বাকি ১৭ জন আছেন সদস্য পদে। গত ১৮ জুন এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এই সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সদ্য ঘোষিত এনসিপি’র গৌরীপুর উপজেলা কমিটির সদস্য হয়েছেন গিয়াস উদ্দিন। তিনি উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আওয়ামী লীগ ছেড়ে কেন এনসিপিতে এলেন? এই প্রশ্নের জবাবে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এখন দেশে আর আওয়ামী লীগ নেই। তাদের রাজনীতি করে আর লাভ নেই। শেখ হাসিনা আর ফিরতে পারবে কিনা তার গ্যারান্টি নেই। তাই এখন নতুন দল এনসিপিতে আছি।’
অভিযোগ আছে, কমিটির অপর সদস্য সেলিম মিয়া ছিলেন ভাংনামারী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে এখন এনসিপির কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এছাড়া তার বাবা আব্দুস সাত্তার বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। তার ছোট ভাই শামীম আহমেদ আকাশ ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
সেলিম মিয়ার ভাষ্য, তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। মামলা হামলা থেকে নিজে ও পরিবারকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগ ছেড়ে এনসিপিতে পদ নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলেই ফোন কল কেটে দেন।
এনসিপির আরেক সদস্য সুরুজ আলীও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল দাবি স্থানীদের।
এছাড়া ভাংনামারী ইউনিয়নের লক্ষীপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম লিটনের স্ত্রী দিনা আক্তার পেয়েছেন এনসিপির সদস্য পদ। এ বিষয়ে দিনা আক্তারের মন্তব্য জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রধান সমন্বয়কারী মাহমুদুল হাসান সমকালকে বলেন, নতুন কমিটি হয়েছে। আমি সবাইকে ভালোভাবে চিনি না। জেলার নেতারা অনেককেই পদায়ন করেছেন। তবে আমরা এখন এগুলো যাচাই-বাছাই করবো। কারও বিরুদ্ধে আওয়ামী সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য ও গৌরীপুর উপজেলার বাসিন্দা তারিক হোসেনের ভাষ্য, যারা কমিটিতে এসেছেন তারা যদি জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের বিরোধীতা করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেও যদি আওয়ামী লীগ করে থাকে তাহলে তো আর দেশের নাগরিকিত্ব চলে যাবে না। তারা কখনোই চান না একজন নিরপরাধ ব্যাক্তি শাস্তি পাক। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো প্রোগ্রাম উপলক্ষে চাদাবাজি করে না। এখানে যারা রাজনীতি করে তারা সবাই নিজেদের পকেট থেকে টাকা খরচ করে দল চালায়।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল হাকিম আজিজ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়েছি। এখন ফ্যাসিস্টদের পতন হলে যখন তাদের বিচারের সময় এসেছে তখন তারা এনসিপির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।’