প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হঠাৎ ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। কাতার এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে বলে জানান তিনি।

গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে আলোচনার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ভূমিকা রেখেছেন।

গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার কিছু পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিজের প্রশাসনের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তাও এ ঘোষণায় বিস্মিত হন। আজ মঙ্গলবার ইসরায়েল–ইরান দুই পক্ষই এই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তবে গতকাল ট্রাম্পের ঘোষণার তিন ঘণ্টার মধ্যেই ইরানে ইসরায়েলের নতুন হামলার খবর পাওয়া যায়। এতে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ সব পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল কি না।

আরও পড়ুনইরানের সঙ্গে সংঘাত শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামবে ২ ঘণ্টা আগে

এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ যুদ্ধবিরতির পক্ষে চাপ প্রয়োগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সহায়তা করেন। দুই মাস ধরে এ তিনজন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার একটি চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছিলেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই তিন কর্মকর্তা ‘সরাসরি ও পরোক্ষ’ উভয় ধরনের চ্যানেল ব্যবহার করে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার শর্ত ছিল, তাদের ওপর ইরান আর আক্রমণ না করলে তারা যুদ্ধবিরতি মেনে নেবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ স্থাপনায় হামলা চালালে তা যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করার পরিস্থিতি তৈরি করে দেয়।

তবে ইরান কী শর্তে রাজি হয়েছে বা তারা তাদের ইউরেনিয়ামের মজুত কোথায় রেখেছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনকাতারে ইরানের হামলার শিকার মার্কিন ঘাঁটি আল উদেইদে আসলে কী আছে১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ