আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম, হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৪ আগস্ট সময় নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজনের নাম প্রকাশ করেছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। তাঁরা হলেন শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। তাঁদের মধ্যে জিয়াউল আহসান গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাঁকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বাকি সব আসামি পলাতক।

চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি সময় নির্ধারণ করেন। সেদিন প্রতিবেদন দাখিল না হলে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেদিনও প্রতিবেদন জমা হয়নি। আজ আবার এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন নির্ধারিত ছিল। আজও প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় আবারও দুই মাস সময় বাড়ানো হলো।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ