রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান জানালেন, একই সঙ্গে এই দুটি ভাইরাসের সংক্রমণ হলে জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ ধরনের রোগীর প্রতি যত্নশীল হওয়া আবশ্যক। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানোটাই সবচেয়ে নিরাপদ। এমন সংক্রমণ যেন না হয়, সে বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, এই চিকিৎসকের কাছ থেকেই সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

করোনা নাকি ডেঙ্গু?

একই সঙ্গে এই দুই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে দেখা দিতে পারে তীব্র জ্বর। ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর আসতে পারে। জ্বর থাকতেও পারে বেশ কিছু দিন। জ্বর ছাড়তে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহের বেশি সময়ও লেগে যেতে পারে। মাথাব্যথা, অত্যধিক তৃষ্ণা, গলাব্যথা, পেশির ব্যথা, গিঁটে ব্যথা, বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, কাশি, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, বমি, শারীরিক দুর্বলতা আর অত্যধিক ক্লান্তিও এই দ্বৈত সংক্রমণের উপসর্গ। তা ছাড়া শ্বাসের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েও যেতে পারে। দেখা দিতে পারে ঘুমের সমস্যা। করোনার সংক্রমণ ও ডেঙ্গু জ্বরের অন্যান্য উপসর্গও দেখা দিতে পারে।

কেন ঝুঁকি বেশি দ্বৈত সংক্রমণে

দেহে যেকোনো জীবাণু প্রবেশ করলে শত্রুকে ঘায়েল করতে দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অকুতোভয় সৈন্যের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। সৈন্যের উদাহরণটি রূপক হিসেবে দেওয়া হলেও এ কিন্তু আদতে এক ‘যুদ্ধ’ই বটে। আপনার সুস্থতার জন্য লড়াই করে আপনারই দেহকোষ। জীবাণুরাও ‘যুদ্ধের ময়দান’ অর্থাৎ আপনার দেহখানা ছেড়ে যেতে চায় না। এই ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ার ফলেই আপনার দেহে দেখা দেয় সংক্রমণের বিভিন্ন উপসর্গ। শত্রু যদি হয় দুই ধরনের অর্থাৎ যদি হয় দ্বৈত সংক্রমণ, তখন লড়াইটাও হয় তুমুল। তাই দেহের ওপর এত সব ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ার প্রভাবটাও পড়ে বেশি। দেহের রক্ষণব্যবস্থার সৈনিক শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যাও অনেকটাই কমে যেতে পারে।

আরও পড়ুনগর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু কতটা ভয়ের১৯ নভেম্বর ২০২৪যেসব জটিলতা দেখা দেয়

দ্বৈত সংক্রমণ হলে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফুসফুস, কিডনি, হৃৎপিণ্ড, লিভার, এমনকি মস্তিষ্কেরও ক্ষতি হতে পারে। রক্তক্ষরণের প্রবণতা বাড়ে। বুকে বা পেটে পানি জমা হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যেতে পারে অস্বাভাবিকভাবে, রক্তচাপও অনেক কমে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘শক’। এ ধরনের জটিলতা প্রাণঘাতী রূপ নিতে পারে। জটিলতা বেশি বলেই দ্বৈত সংক্রমিত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। হাসপাতালে থাকতেও হতে পারে লম্বা সময়। অবস্থা বেগতিক হলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।

দ্বৈত সংক্রমণ হলে কাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশিডেঙ্গু জ্বর হলে অন্তত দুই সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ব ত স ক রমণ আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

যাঁদের টানে দেশে ফিরলেন, তাঁদেরই কবরে শোয়ালেন বাহার

ওমানপ্রবাসী আবদুল বাহার স্বজনদের সঙ্গে ফিরছিলেন বাড়িতে। মা, স্ত্রী, মেয়ে, নানি, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাইয়ের মেয়ে সবাই ছিলেন সঙ্গে। বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাড়িতে অনেক হাসিঠাট্টা, খুনসুটি চলছিল। কিন্তু কে জানত মুহূর্তেই এই আনন্দের পরিবেশ পরিণত হবে বিষাদে।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামে এসে পৌঁছায় বাহারের নানি ফয়জুন নেসা (৮০), মা খুরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা বেগম (৩০), মেয়ে মীম আক্তার (২), ভাতিজি রেশমি আক্তার (১০), ভাবি লাবনী বেগম (৩০) এবং লাবনীর মেয়ে লামিয়া আক্তারের (৯) মরদেহ।

ওমান থেকে দেশে ফেরা আবদুল বাহারকে আনতে ঢাকা থেকে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু দেশে ফেরা আনন্দে শেষতক নেমে এল মৃত্যুর ছায়া। গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়াপুর এলাকায় বাড়ি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি একটি খালে পড়ে। বাহার ছাড়া পরিবারের কেউই ফিরে আসেননি।

গতকাল সকালে বাহারদের বাড়ির ছোট উঠানজুড়ে সারি সারি সাতটি লাশ এনে রাখা হয়। খবর পেয়ে সকালেই লোকজন জড়ো হয়েছেন। শেষযাত্রার কিছু আয়োজনও সম্পন্ন হয়েছে। এক পাশে গোসলের জন্য টানানো হয়েছে শামিয়ানা। উঠানে পাতা হয়েছে চেয়ার। সবকিছুর মধ্যে নিদারুণ এক শোকের বার্তা।

যাঁদের জন্য প্রবাস থেকে ফেরা, তাঁদেরই কবরে শোয়ালেন বাহার। দুই বছরের মেয়ে মীমকে ভালো করে একটু বুকে জড়িয়ে আদরও করা হলো না। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় একসঙ্গে জানাজা হয় ছয়জনের। বাহারের নানি ফয়জুন নেসার লাশ নেওয়া হয় পাশের ইউনিয়ন হাজির পাড়ায়। বাকিদের দাফন হয় জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামে।

পারিবারিক কবরস্থানে এক সারিতে দুটো কবর, সামান্য দূরেই চারটি। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেখানেই একে একে মা খুরশিদা বেগম, স্ত্রী কবিতা, মেয়ে মীমসহ নিহত স্বজনদের শুয়ে দেন বাহার।

চৌপল্লী গ্রামে মানুষের ভিড়। এত মৃত্যু একসঙ্গে আর দেখেনি কেউ। শোকে স্তব্ধ গ্রামের বাসিন্দারা। গতকাল বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্র সংগঠনগুলোর বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল: ঢাবি পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আ
  • ভালোবেসে সংসার, বিদায়ও একসঙ্গে
  • স্টোরিতে জয়ের ছবি দিয়ে আলোচনায় শাকিব খান
  • শপিংমলে একসঙ্গে ‘সাইয়ারা’ জুটি আহান-অনীত, প্রেমের গুঞ্জন
  • ভারত কি চীনের সামুদ্রিক ‘উঠানে’ ঢুকে পড়ছে
  • শরীর স্পর্শ করার প্রয়োজন হলে অনুমতি নিতেন শাহরুখ: শিবা
  • যাঁদের টানে দেশে ফিরলেন, তাঁদেরই কবরে শোয়ালেন বাহার