‘সংস্কার সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারলে অনিশ্চয়তা আসবে’
Published: 25th, June 2025 GMT
‘‘সংস্কার দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এটি বাস্তবায়নে তাড়াহুড়োর সুযোগ নেই। প্রতিটি সংস্কারেরই অনিশ্চয়তা থাকে। সে কারণে রাজনীতিবিদদের চোখে সংস্কারকে দেখলে হবে না। বাংলাদেশীরা সৌভাগ্যবান। তাদের সামনে বারবার সুযোগ এসেছে। কিন্তু কোনো সুযোগকেই কাজে লাগাতে পারেনি। তাই সংস্কারকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। নইলে অনিশ্চয়তা চলে আসবে। কারণ সংস্কার ব্যর্থ হলে পরিণতি ভালো হয় না।’’
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে ডিএসই ব্রোকার্স আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.
তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, অতীতের কোনো সরকার ক্যাপিটাল মার্কেটকে মেইন স্ট্রিমে এনে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা দরকার মনে করেনি। তবে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে চিন্তা করছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘ক্যাপিটাল মার্কেটে যে নেগেটিভ ইক্যুয়িটির বিষয় রয়েছে সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে লিখিত কমিটমেন্ট নিয়ে এটা আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো। অনেকে আলোচনা সমালোচনা করছেন সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেই। যে কোনো পলিসির সাইড ইফেক্ট আছে, সেটা পজিটিভ বা নেগেটিভ। পলিসি মেকারকে সেই চিন্তা করতে হয়।’’
‘‘অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু এক সঙ্গে সব সমাধান করা যাবে না। একটা একটা করে সমাধান করতে হবে। রিফর্ম প্রসেসে এমন সময় লাগবে। রাজনীতিবিদরা সরকারকে প্রেসারে রাখার জন্য তাড়াহুড়া করে সংস্কার করতে বলে। বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা একটি সেক্টরের রিফর্ম নয়। এটাকে সিস্টেমিক রিফর্ম বলে।’’
‘‘অনেক বাংলাদেশী যুবক-তরুণ বিদেশে বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশের বিষয়ে তাদের আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশে তারা বিনিয়োগ করার সুযোগ খোঁজে। তাই আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসব আগ্রহী যুবক বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তাদের আলোচনার সুযোগ থাকবে। আলোচনার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করবে, তাতে দেশের উন্নয়ন হবে,’’ বলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আইসিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিডিবিএল চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী ও এফআইসিসিআই সভাপতি জাভেদ আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনএফ//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মব’–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের
‘মব’ তৈরি করে লালমনিরহাটে বাবা–ছেলেকে মারধর এবং ঢাকায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সেই সঙ্গে মব–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে তারা।
বুধবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিষদের সভা থেকে এ দাবি জানানো হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের (প্রিন্স) সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ২২ জুন লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দরিদ্র নরসুন্দর বাবা ও ছেলেকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় মব (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টিকারী লোকজন। একই দিনে আওয়ামী লীগের প্রহসনের নির্বাচনে সহযোগিতাকারী সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে মব তৈরি করে জুতার মালা পরানো হয় ও মারধর করা হয়।
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, আইনের শাসনের বিরোধী ও গণতন্ত্রের পক্ষে হুমকিস্বরূপ এসব মব–সন্ত্রাস বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও অব্যাহত মব–সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা সীমাহীন, যা কোনোক্রমে মেনে নেওয়া যায় না। শুধু সরকার নয়, সেনাপ্রধান মবের বিরুদ্ধে বলার পরও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে না। ফলে দেশের জনগণ আতঙ্কিত। তাঁরা অভিযোগ করেন, মব–সন্ত্রাসে সরকার নীরব থাকলেও, জনগণের বাক্স্বাধীনতা দমন করছে।
সভায় নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া, রাখাইনে করিডর দেওয়াসহ ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর প্রতিবাদে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ রোডমার্চের ডাক দিয়েছে। চট্টগ্রামে রোডমার্চের প্রচার চলাকালে ২৩ জুন পুলিশ প্রচারকাজে নেতা–কর্মীদের বাধা দেয়। এ ধরনের আচরণ গণতন্ত্র পরিপন্থী।
সভায় রোডমার্চের প্রচারকাজে বাধা সৃষ্টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।