তিন দেশ থেকে আনা হচ্ছে ১ লাখ ৫ হাজার টন সার
Published: 26th, June 2025 GMT
সার, গম, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অকটেন আমদানির ৭টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এসব প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্রয় কমিটির বৈঠকে গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এই কেনাকাটায় ১৮ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। চাল গমের যে মজুত আছে, সেটা এখনও সন্তোষজনক। তবু আমরা বলেছি ৫০ হাজার টন গম এনে রাখার জন্য, যাতে খাদ্যের কোনো ঘাটতি না হয়।’
তিনি বলেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে হরমুজ প্রণালি দিয়ে পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে এখনও কোনো প্রভাব পড়েনি। মরক্কো, তিউনিসিয়া থেকে আসা সারের দামও কিছুটা বেড়েছে।
সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন গম ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এই গম আনতে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
এছাড়া কানাডা, তিউনিসিয়া ও মরক্কো থেকে এক লাখ ৫ হাজার টন সার আমদানি করবে সরকার। এর মধ্যে কানাডা থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি, তিউনিসিয়া থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি এবং মরক্কো থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৮১ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া থেকে ৫৬৯ কোটি ২৯ হাজার ৩৬৩ টাকা ব্যয়ে এ এলএনজি আমদানি হবে।
এদিকে চলতি জুন মাসে ২৫ হাজার টন গ্যাসোলিন ৯৫ আনলেডেড (অকটেন) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ইন্দোনেশিয়া থেকে এই অকটেন আমদানিতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলএনজ হ জ র টন সরক র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা
চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’
প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।”
জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।
স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।
থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ