সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমি ও পুকুর লিখে নেওয়ার পর বৃদ্ধ বাবা-মাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ছানোয়ার হোসেন মন্ডল (৬৭) তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী ছানোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মতিজান নেছা উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কুসুম্বী গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দুই ছেলে—মো.

মোক্তার হোসেন মন্ডল (৩৫) ও মো. আব্দুল মানিক মন্ডল (৩০)। 

স্থানীয়রা জানান, দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের কাছে অল্প সময়েই বোঝা হয়ে পড়েন বৃদ্ধ দম্পতি। প্রায় তিন বছর আগে বয়স্ক ভাতা করে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাদের জমি ও পুকুর নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন দুই ছেলে। এর পর থেকেই শুরু হয় অবহেলা, নির্যাতন ও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া। 

ছানোয়ার হোসেন জানান, সম্পত্তি হস্তান্তরের কিছুদিন পর থেকেই ছেলে ও পুত্রবধূরা বিভিন্ন অজুহাতে তাদের গায়ে হাত তোলে। এক পর্যায়ে তিন দফায় মারধরের শিকার হন তিনি ও তার স্ত্রী। বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেন স্ত্রীর বড় বোনের বাড়িতে। পরে কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে ফিরে এলে আবারও ঘরে উঠতে বাঁধা দেন ছেলেরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মতিজান নেছা বলেন, ‘এ বয়সে কাজ করতে পারি না। যা পাই তাই দিয়ে দিন পার করি। ছেলে-বউদের নির্যাতনে পাগলপ্রায় হয়ে গেছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রাজিব সরকার রাজু বলেন, ঘটনাটি সত্য। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হয়েছে, কিন্তু দুই ছেলে কোনো সমাধানে রাজি হয়নি। 

জমি লিখে নেওয়া ও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ছেলে মো. মোক্তার হোসেন বলেন, ‘বাবা-মা নিজের ইচ্ছায় জমি দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ওই অসহায় দম্পতিকে সহায়তার বিষয়েও আমরা ভাবছি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইটনায় ইউএনওর বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ১

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হানুল ইসলামের বাসভবনে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে আব্দুর নূর (৪৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আব্দুর নূর ইটনা সদরের বড়হাটি গ্রামের মৃত খুর্শিদ মিয়ার ছেলে।

ইউএনও রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘‘স্থানীয় কয়েকজন উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে জুয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন খেলাধুলা পরিচালনা করছিলেন। এমন অভিযোগ পেয়ে ওই মাঠে খেলাধুলার বিষয়ে কিছু বিধি-নিষেধ জারি করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শতাধিক দুর্বৃত্ত পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় আমার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় বাসভবনের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দিতে চাইলে আনিস মিয়া নামে এক এসআইসহ কয়েকজন পুলিশ ও আনসার সদস্য আহত হন। ঘটনার সময় আমি বাসার বাহিরে ছিলাম। হামলাকারীরা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনায় আহত এক আনসার সদস্য বাদী হয়ে ইটনা থানায় মামলা করেছেন।’’

আরো পড়ুন:

প্রবাসীর পরিত্যক্ত ঘরে মিলল ৩০ হাতবোমা

গাছের পাতা খাওয়ায় কুপিয়ে মারা হলো ছাগলকে

ইটনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘ইউএনওর বাসভবনে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে ৪২ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন এক আনসার সদস্য। মামলার পরপরই এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’’

ঢাকা/রুমন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৌলতপুরে বানভাসী মানুষের মাধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ 
  • মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য, দুপুরে ভাঙচুর
  • ইটনায় ইউএনওর বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ১