জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়া করলেন দুই ছেলে
Published: 2nd, July 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমি ও পুকুর লিখে নেওয়ার পর বৃদ্ধ বাবা-মাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ছানোয়ার হোসেন মন্ডল (৬৭) তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী ছানোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মতিজান নেছা উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কুসুম্বী গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দুই ছেলে—মো.
স্থানীয়রা জানান, দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের কাছে অল্প সময়েই বোঝা হয়ে পড়েন বৃদ্ধ দম্পতি। প্রায় তিন বছর আগে বয়স্ক ভাতা করে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাদের জমি ও পুকুর নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন দুই ছেলে। এর পর থেকেই শুরু হয় অবহেলা, নির্যাতন ও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া।
ছানোয়ার হোসেন জানান, সম্পত্তি হস্তান্তরের কিছুদিন পর থেকেই ছেলে ও পুত্রবধূরা বিভিন্ন অজুহাতে তাদের গায়ে হাত তোলে। এক পর্যায়ে তিন দফায় মারধরের শিকার হন তিনি ও তার স্ত্রী। বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেন স্ত্রীর বড় বোনের বাড়িতে। পরে কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে ফিরে এলে আবারও ঘরে উঠতে বাঁধা দেন ছেলেরা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মতিজান নেছা বলেন, ‘এ বয়সে কাজ করতে পারি না। যা পাই তাই দিয়ে দিন পার করি। ছেলে-বউদের নির্যাতনে পাগলপ্রায় হয়ে গেছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রাজিব সরকার রাজু বলেন, ঘটনাটি সত্য। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হয়েছে, কিন্তু দুই ছেলে কোনো সমাধানে রাজি হয়নি।
জমি লিখে নেওয়া ও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ছেলে মো. মোক্তার হোসেন বলেন, ‘বাবা-মা নিজের ইচ্ছায় জমি দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ওই অসহায় দম্পতিকে সহায়তার বিষয়েও আমরা ভাবছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ধামইরহাটের ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তার কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার মঙ্গলকোটা গ্রামের বাসিন্দারা।
ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামীর আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, আজ সকাল ১১টায় ইউএনও মঙ্গলকোটা গ্রামে একটি খাস জায়গা দখলমুক্ত করে সেটিকে ধামইরহাট পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ করেন। স্থানীয়রা ওই জায়গাকে বর্জ্য রাখার স্থান করতে বাধা দিলে ইউএনওর সঙ্গে হট্টগোল হয়। আমি মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে ইউএনওর নির্দেশে আমাকে আটক করার চেষ্টা করেন আনসার সদস্য। এ সময় আমার স্ত্রী এসে আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে ইউএনও নিজে আমার স্ত্রীর বুকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন এবং লাল নিশান টাঙানো বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার স্ত্রীকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করেন। প্রতিবেশী সাবিনা ইয়াসমিন বাধা দিতে গেলে ইউএনও তাকেও মারপিট করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে আমার স্ত্রী ও সাবিনা ইয়াসমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হানজালা বলেছেন, পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ঝামেলা হয়। এর জের ধরে গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ঘেরাও করেন। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।
এ বিষয়ে ইউএনও শাহারিয়ার রহমান বলেছেন, নারীর গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। গ্রামবাসী সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। এ থেকে বাঁচার জন্যই তারা নাটক করছে।
ঢাকা/সাজু/রফিক