নানাবাড়ি থেকে ফেরার পথে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 5th, July 2025 GMT
মির্জাপুরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত মেহেদি খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৭ জুন মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা।
গ্রেপ্তার মেহেদি খান উয়ার্শী ইউনিয়নের সাফর্তা গ্রামের লিটন খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগও রয়েছে।
কিশোরীর বক্তব্য থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত মেহেদি খান কিছুদিন ধরে ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে। গত ২৭ জুন বিকেলে ওই কিশোরী তার এক বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে পাশের গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে যায়। বিকেল ৫টার দিকে নানাবাড়ি থেকে নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় তারা। কিছুদূর যাওয়ার পর ওই গ্রামেরই একটি নির্জন স্থানে পৌঁছলে পেছন দিক থেকে এসে দু’জনের হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করতে থাকে মেহেদি খান। কিশোরীর বান্ধবী দৌড়ে মেহেদির বাড়িতে যায় ঘটনা জানাতে। এ সময় ওই কিশোরীকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ কথা কাউকে বললে প্রাণে মারার হুমকি দেয়।
ঘটনা জানার পর কিশোরীর পরিবার মাতবরদের কাছে বিচার দাবি করে। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও কোনো বিচার না পেয়ে শনিবার থানায় মামলা করেন কিশোরীর মা। এর আগে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় পুলিশ নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত মেহেদি খানকে আটক করে।
শনিবার দুপুরে কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন মাতবর জানান, রাস্তায় হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করার অভিযোগ করে কিশোরীর পরিবার। অভিযুক্ত আত্মগোপনে থাকায় সামাজিকভাবে বিচার করা সম্ভব হয়নি। কিশোরীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে গ্রপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ র র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।
গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান