বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি নিয়ে দ্বিতীয় দফার আলোচনা আজ বুধবার শুরু হবে। ওয়াশিংটনে এ আলোচনা হবে আগামী শুক্রবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত। ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) দপ্তর এ আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৭ জুলাই তারিখে ১৪টি দেশের নেতার কাছে পাঠানো চিঠির পর বাংলাদেশ প্রথম দিকের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যারা এই আলোচনা পুনরায় শুরু করছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, যিনি সরাসরি ওয়াশিংটন ডিসিতে অংশ নিচ্ছেন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত হবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড.

খলিলুর রহমান। এ ছাড়া বাণিজ্য সচিব ও একজন অতিরিক্ত সচিবসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন।

গত ২৭ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম দফার গঠনমূলক আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ আশাবাদী যে চুক্তির চূড়ান্তকরণ দ্রুত সম্ভব হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ, যা ইউএসটিআর নামে পরিচিত, তাদের হিসাবে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক এক হাজার ৬০ কোটি ডলার। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে। যার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলার। 

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে–– কৃষিপণ্য যেমন, খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম ও ভুট্টা। এছাড়া যন্ত্রপাতি এবং লোহা ও ইস্পাতজাত পণ্যও আসে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে–– তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী ও কৃষিপণ্য।
 

ঢাকা/হাসান//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াশিংটনের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় পেছানোয় স্বস্তিতে ঢাকা

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর ওয়াশিংটনের আরোপিত পাল্টা শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে ঢাকা। এ শুল্ক প্রত্যাহার বা কমাতে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চলমান দরকষাকষিতে বাড়তি সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় তার তালিকাসহ প্রস্তাবিত চুক্তির 'এনেক্সার ডকুমেন্ট' বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা থাকলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। এছাড়া প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে দরকষাকষির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে তা স্থগিত করে আগামী বুধবার সভার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘চুক্তি নিয়ে ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও একটি মিটিং হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সভায় যোগ দেবেন। আমি ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হবো’। 

ইউএসটিআরের সঙ্গে চলমান নেগোসিয়েশনে সরাসরি অংশ নিতে বাণিজ্য সচিবকে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার বাণিজ্য সচিবের যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা থাকলেও ইউএসটিআর থেকে চুক্তির ডকুমেন্ট না পাওয়ায় যেতে পারেননি তিনি। 

সচিব বলেন, ‘৩ জুলাইয়ের বৈঠকে এই ডকুমেন্ট পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। বৈঠকে আরও জানানো হয় যে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) যুক্তরাষ্ট্র আলাদা কিছু ভাবছে, এ জন্যই হয়তো ডকুমেন্ট পাঠাতে দেরি হচ্ছে। তারা ডকুমেন্ট পাঠানোর পর দুই-একদিনের মধ্যে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব।’

তিনি বলেন, 'ওখানে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের কাছে গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, সেখানে বসে তো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। কারণ জাপানের সঙ্গে আমাদের ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষরের নেগোসিয়েশন চলছে। জাপান তাদের গাড়ির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধার ক্ষেত্রেও আমরা রাজি হইনি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে কী প্রস্তাব দেবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে যেতে হবে।'

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। গত রোববার মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, সব দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ক আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক হবে: অর্থ উপদেষ্টা
  • দর কষাকষির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ঠিক হবে: অর্থ উপদেষ্টা
  • ওয়াশিংটনের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় পেছানোয় স্বস্তিতে ঢাকা