মালয়েশিয়ান মডেল ও অভিনেত্রী লিশাল্লিনি কানারন অভিযোগ করেছেন, এক ভারতীয় পুরোহিত তাঁকে ‘আশীর্বাদ’ দেওয়ার নাম করে যৌন নিপীড়ন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত মাসে মালয়েশিয়ার সেপাংয়ে। লিশাল্লিনি ২০২১ সালের মিস গ্র্যান্ড মালয়েশিয়া প্রতিযোগিতার বিজয়ী। সম্প্রতি যৌন হয়রানি নিয়ে নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে দীর্ঘ পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। খবর এনডিটিভির

দক্ষিণ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সেপাং জেলার পুলিশপ্রধান এসিপি নোরহিজাম বাহামান বলেন, অভিযুক্ত পুরোহিত ভারতীয় নাগরিক, যিনি মূল পুরোহিত অনুপস্থিত থাকায় অস্থায়ীভাবে দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি প্রথমে ‘ভারত থেকে আনা পবিত্র জল’ বলে এক তরল পদার্থ মডেলের মুখে ছিটিয়ে দেন, যার গন্ধ ছিল প্রচণ্ড এবং চোখে জ্বালাপোড়া করে। এরপরই তিনি মডেলের গায়ে অশালীনভাবে হাত দেন।


লিশাল্লিনির অভিযোগ, তদন্তকারী কর্মকর্তা তাঁকে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমাকে বলা হয়েছিল, যদি আমি বিষয়টি প্রকাশ করি, তাহলে দোষ আমারই হবে। আমি দায়ী হব।’ কিন্তু তিনি সেই পরামর্শ না মেনে ইনস্টাগ্রামে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
লিশাল্লিনি জানান, ২১ জুন মন্দিরে প্রার্থনার জন্য গিয়েছিলেন তিনি, তাঁর মা তখন ভারতে ছিলেন। ‘আমি ধর্মীয় রীতিনীতি খুব একটা জানি না, তাই এই পুরোহিত সব সময় আমাকে সাহায্য করতেন,’ লিখেছেন তিনি। ‘সেদিন তিনি বলেন, আমার জন্য তার কাছে পবিত্র জল ও রক্ষা সূত্র আছে, যেটা আমাকে আশীর্বাদ দেবে। প্রার্থনার পর তাকে দেখাতে বলেন।’ বলেন তিনি।

প্রার্থনা শেষে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর পুরোহিত তাঁকে নিজের ব্যক্তিগত কক্ষে ডাকেন। সেখানেই ঘটে নিপীড়নের ঘটনা।
লিশাল্লিনি লিখেছেন, পুরোহিত প্রথমে তাঁর চোখে একটি ঝাঁঝালো তরল ছেটান, পরে বুকের ওপর হাত দেন। এরপর তাঁকে পোশাক খোলার জন্য চাপ দেন, বলেন এটা নাকি তাঁর মঙ্গলের জন্য। লিশাল্লিনি রাজি না হলে পুরোহিত বলেন, আঁটসাঁট পোশাক পরে তিনি ‘পাপ’ করছেন।

ঘটনার ভয়াবহতা তখন চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন, পুরোহিত তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে শরীরের ব্যক্তিগত অংশে হাত ঢুকিয়ে তাঁকে স্পর্শ করতে থাকেন। লিশাল্লিনির ভাষায়, ‘আমি জানতাম এটা ঠিক হচ্ছে না, কিন্তু আমার শরীর জমে গিয়েছিল। কথা বলতে পারছিলাম না। নড়তে পারছিলাম না।’

এই ঘটনার সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক দিক ছিল—এটা ঘটেছিল মন্দিরের মতো এক পবিত্র জায়গায়। ‘আমি সেখানে গিয়েছিলাম মানসিক শান্তি খুঁজতে, কিন্তু সেখানেই এই বিশ্বাসঘাতকতা। সেই কষ্টটা সবচেয়ে গভীর। আমি বিস্তারিত বলব না, শুধু বলব, আমি ওই পুরোহিতের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছি। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি,’ লিখেছেন তিনি।

আরও পড়ুনকীভাবে সাহস হয় আমাকে স্পর্শ করার, যৌন হয়রানি নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী২৯ মে ২০২৫

লিশাল্লিনি বলেন, ঘটনাটি তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। ৪ জুলাই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু ততক্ষণে পুরোহিত পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ হয়েছিল, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে নিজেদের সম্মান বাঁচাতে চেয়েছে।’

মালয়েশিয়ান পুলিশ এখন ওই পুরোহিতের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমাদের নতুন সংসার, সব স্বপ্ন ভেঙে গেল’

‘আমাদের নতুন সংসার। অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন ভেঙে গেল। এখন স্বামীকেই হারালাম। আমি টাকা চাই না, আপনারা আমার স্বামীকে এনে দেন।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়ার স্ত্রী নূপুর আক্তার (২২)।

সবুজ মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায়। তিনি উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামের প্রয়াত হাবিদুল ইসলামের ছেলে। দেড় বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে ছোট ভগবানপুর গ্রামে মাতম চলছে।

রোববার বিকেলে গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ছোট ভগবানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ মিয়ার বাড়িতে আহাজারি চলছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়স্বজনেরা। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে আশপাশের লোকজন বাড়িতে ভিড় করছেন। সবুজের স্ত্রী নূপুর বারবার লুটিয়ে পড়ছেন।

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় শাহাদাতবরণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ