ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদ একসময় ছিল একটা নাটক। এই নাটক থেকে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি। আমরা দীর্ঘ ১৮ বছর যে ফ্যাসিস্ট দ্বারা কবলিত ছিলাম, সেই ফ্যাসিস্ট থেকে আমরা মুক্ত। আমরা নতুন বাংলাদেশের নতুন পুলিশ হিসেবে কাজ করছি।’

আজ রোববার শরীয়তপুর পুলিশ লাইনসে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক এ কথা বলেন। বেলা ১১টায় পুলিশ লাইনসের ড্রিল শেডে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ।

অনুষ্ঠানে ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, সড়ক ও নৌপথসহ বিভিন্ন জায়গায় যে চাঁদাবাজি হচ্ছে, সেসব চাঁদাবাজি রোধে কাজ করছে পুলিশ। কোনো চাঁদাবাজি, কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলবে না। চাঁদাবাজ যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে।

সুধী সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য, সুশীল সমাজের সদস্য ও জেলা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে গণ-অভ্যুত্থানে শরীয়তপুরের ১৪ শহীদ পরিবারকে উপহারসামগ্রী তুলে দেন ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রব হাসেমী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড আইজ

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের যে কৌশলে ‘জিহাদি’ শারা হয়ে উঠলেন সিরিয়ার ‘আমির’

২০১৯ সালের বসন্ত। রুশ বিমানবাহিনীর সহায়তায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইদলিবের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তৈরি হয় জরুরি পরিস্থিতি।

হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জোলানি (আহমেদ আল–শারা নামে বেশি পরিচিত) তখন ইদলিবের কেন্দ্রস্থলে একটি নিরাপদ বাড়িতে তাঁর সহযোগী ও কয়েকজন বিদেশি অতিথির সঙ্গে বসেছিলেন। অতিথিদের মধ্যে তুর্কিও ছিল।

রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল–শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’

আশ–শারা বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন ছিল শুভ ইঙ্গিত, নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্রষ্টার একধরনের বার্তা। তাঁর বিশ্বাস ছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কঠিন হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেতা সম্ভব। তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা, যাঁদের মধ্যে সালাফি পটভূমির লোকও ছিলেন। বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন সত্যি তিনি বিশ্বাস করতেন।

ওই গল্প বলার প্রায় পাঁচ বছর পর আহমেদ আল–শারা তাঁর বিদ্রোহী খেতাব কাটিয়ে সিরিয়ান আরব রিপাবলিকের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ সেই ‘আমির’ হন, যার স্বপ্ন তিনি একসময় দেখেছিলেন।

রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল-শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’

এখন জোলানি নিজের জন্মনাম আহমেদ আল–শারা নামে পরিচিত। ৪৩ বছরের শারা খুব দ্রুতই নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। একসময়ের ‘জিহাদি সন্ত্রাসী’ (যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কথায়) থেকে এখন রাষ্ট্রনেতা তিনি। ইরাক থেকে সিরিয়া। দীর্ঘ সময় আল–কায়েদা ঘরানার বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে সক্রিয় থাকার পর এমন পরিবর্তন বিস্ময়করই বলা যায়।

আসাদ পরিবারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শারা এখন সেসব বিশ্বনেতার সঙ্গেও মিশছেন, যাঁদের তিনি একসময় এড়িয়ে চলতেন। তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জনসমক্ষে উপস্থিত হন, শ্মশ্রু ছোট করেছেন, পাগড়ি ও থোব (ঐতিহ্যবাহী দীর্ঘ ঢিলেঢালা পোশাক) ছেড়ে স্যুট–টাই পরছেন। সব মিলিয়ে এমন একটি নতুন রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করছেন, যেখানে স্পষ্ট ইসলামি প্রভাব নেই।

কিন্তু এ রূপান্তর কীভাবে সম্ভব হলো

তুরস্কসহ আঞ্চলিক কর্মকর্তারা, সিরীয় সূত্র, বিশেষজ্ঞ, এমনকি সিরিয়ার সরকারি শাসনব্যবস্থার ভেতরের লোকেরাও মনে করেন, ইদলিবে শারার শাসনামলেই ধীরে ধীরে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও ভূমিকার এ পাল্টে যাওয়া শুরু হয়। ইদলিব মূলত একধরনের অনানুষ্ঠানিক ‘ক্ষুদ্র রাষ্ট্র’ হয়ে উঠেছিল, যা শারার ভাবমূর্তিকে পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

‘তাঁর (আল–শারা) রূপান্তরে তুরস্ক খুবই বাস্তব ভূমিকা রেখেছে’, এইচটিএসের নেতা থাকাকালীন শারার সঙ্গে দেখা করা একজন তুর্কি কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন।

তুরস্কের সঙ্গে প্রথম বড় যোগাযোগ

তুর্কি কর্মকর্তার মতে, শারার নিজেরও বদলে যাওয়ার কারণ ছিল। সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে টিকে থাকতে হতো, আর তুরস্কই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা। কারণ, তিনি এমন এক এলাকায় আটকে ছিলেন, যেখানে আঙ্কারা ছিল তাঁর জীবনসঞ্চারণী রেখার মতো।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে, ১৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যারিয়ারের শুরুতে কত টাকা পারিশ্রমিক পেতেন তৌকীর?
  • ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিন্দুধর্মের প্রতি আনুগত্য আর গোপন নেই, কেমন এমন সমালোচনা হচ্ছে
  • একাত্তরের পর আবারও যেভাবে বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তান
  • তুরস্কের যে কৌশলে ‘জিহাদি’ শারা হয়ে উঠলেন সিরিয়ার ‘আমির’